গাছের বয়স বাড়ায় মালদহে আমের ফলন কমেছে। নষ্ট হয়েছে গুণগত মান। আগের মতো স্বাদ ও গন্ধ মিলছে না। ওই কারণে দেশের পাশাপাশি বিশ্বের বাজারে মালদহের আমের কদর কমছে। দেশের বাইরে আম বিক্রি করতে হিমসিম খেতে হয় ব্যবসায়ীদের। অবশেষে তাই আধুনিক পদ্ধতিতে গাছের পুনর্নবীকরণের মাধ্যমে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দফতর সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে আম চাষি ও ব্যবসায়ী মহলে। ডিসেম্বরের মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু হবে।
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দফতরের জেলা উপঅধিকর্তা প্রিয়রঞ্জন সানিগ্রাহি বলেন, “পুরনো আম গাছ পুনর্নবীকরণ প্রক্রিয়া সফল হলে মালদহে আমের ফলন বেড়ে যাবে। গুণগত মান ফিরে আসবে।” কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিশির মিত্রের পরামর্শে পুরনো আম গাছে পুনর্নবীকরণ করা হবে। উদ্যানপালন দফতরের বিশেষজ্ঞরা জানান, ৫০-৬০ বছরের পুরনো গাছের গোড়া থেকে ছ’ফুট রেখে উপরের সব ডালাপালা ছেঁটে ফেলার জন্য চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই গাছে ফের ডালপালা বার হবে। দু’বছর পর থেকে ফলন শুরু হবে। ওই ফলের গুণগত মান আগের মতো হবে বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি। এই কাজে জেলার শতাধিক চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে জেলার ১৮ জন আমচাষির ৩৬০টি পুরনো গাছ কেটে পুনর্নবীকরণের কাজ শুরু হবে। |
মালদহ জেলায় আমের ফলন |
২০০৯ ৯০ হাজার টন।
২০১০ ২.২৫ লক্ষ টন।
২০১১ ১.২০ লক্ষ টন। |
|
মালদহে ২৮ হাজার হেক্টরে আম বাগান আছে। ওই সমস্ত বাগানের ৬০ শতাংশ গাছের বয়স ৬০ থেকে ১০০ বছর। বয়স বেশি হওয়ায় ওই সমস্ত গাছে প্রতি বছর ভাল ফলন হচ্ছে না। যে আম হচ্ছে তার গুণগত মান এতটা খারাপ যে জেলার বাইরে কেউ কিনতে চাইছে না। গাছের ফলনও কমেছে। উদ্যানপালন দফতর এই প্রসঙ্গে জানায়, পুরনো গাছগুলি যে বছর ছাঁটা হবে তার দু’বছর পর থেকে ফের ফলন শুরু হবে। গাছ কাটার পরে চাষিদের যেন সমস্যা না হয় সে জন্য আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। এ কারণে চাষিরা পুনর্নবীকরণের কাজে এগিয়ে আসবেন বলে মনে করছেন উদ্যানপালন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা জানান, চাষিদের বোঝানো হচ্ছে গাছের পনর্নবীকরণের ফলে ফলন দ্বিগুণের বেশি হবে। টানা ১৫ বছর একই ফলন পাওয়া যাবে। |