|
|
|
|
সেন্ট্রাল হলে মমতাকে ঘিরে বিজেপি |
জয়ন্ত ঘোষাল • নয়াদিল্লি |
পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ টানার চেষ্টার পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা এ বারের দিল্লি সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এটাই ছিল কর্মসূচি। বরাবরই জাতীয় রাজনীতিতে আগ্রহ রয়েছে তৃণমূলনেত্রীর। মমতা ধরেই নিয়েছেন, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের আগেই হবে। আর তা ধরে নিয়েই নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংযোগের কাজে সক্রিয় হয়েছেন তিনি। যার অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে আজ সংসদের সেন্ট্রাল হলে পৌঁছে যান মমতা। সন্ধ্যায় শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকের আগে দুপুরে সেখানে দীর্ঘক্ষণ ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে কথা বলেন। যে কথাবার্তা শুধুই রাজনৈতিক আলোচনায় সীমাবদ্ধ ছিল না, হয়ে ওঠে জমাটি আড্ডার আসরও।
মমতা সংসদের সেন্ট্রাল হলে আসছেন শুনে আজ বিজেপি শিবিরে ছিল প্রবল উৎসাহ। একে তো মমতা তাঁদের পুরনো জোটসঙ্গী, তার উপরে তাঁদের মূল শত্রু কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মমতা যে ভাবে সুর চড়িয়েছেন, তাকে কাজে লাগাতে চান বিজেপি নেতৃত্ব। মমতা সংসদে পৌঁছনোর কিছু পরেই লোকসভার বিরোধী দলনেতা সুষমা স্বরাজ ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি ব্যক্তিগত ভাবে এসে মমতার সঙ্গে দেখা করেন। দু’জনেই তাঁকে অভিনন্দনও জানান। প্রথমে মুকুল রায়ের সঙ্গে আসেন অরুণ জেটলি। সেন্ট্রাল হলে বসেই খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে মমতার সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয় জেটলির। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও তখন সেখানে
উপস্থিত ছিলেন। এফডিআই-বিতর্কে রাজ্যসভায় জেটলির বক্তৃতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে মমতা বলেন, “আমি সব খবর রাখি। আমি শুনেছি, আপনি কত ভাল বক্তৃতা দিয়েছেন। শুনে মুগ্ধ হয়েছি।”
এ দেশে ওয়ালমার্টের বিনিয়োগে ঘুষ দেওয়া ও দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়েও মমতা-জেটলির দীর্ঘ আলোচনা হয়। এর পরে সেন্ট্রাল হলে হাজির হন সুষমা স্বরাজ। তাঁর সঙ্গেও মমতার দীর্ঘ কথা হয়। শুধু সুষমা-জেটলিই নন, বসুন্ধরা রাজের পুত্র তথা বর্তমানে বিজেপি সাংসদ দুষ্মন্ত সিংহ, বিজেপির কোষাধ্যক্ষ পীযূষ গোয়েলরাও এসে মমতার সঙ্গে দেখা করে যান। আর এক বিজেপি সাংসদ, প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ তো রীতিমতো পায়ে হাত দিয়ে মমতাকে প্রণাম করেন।
শুধু বিজেপি নেতারাই নন, এনসিপি-প্রধান শরদ পওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া সুলেও আজ মমতার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। আবার মুলায়ম, মায়াবতী, নীতীশ কুমারের দলের সাংসদরাও অনেকেই এসে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করে যান। গত শুক্রবারই কলকাতায় গিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। সে দিন অবশ্য দুই মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে আলাদা ভাবে নির্ধারিত বৈঠকটি হয়নি। জেডি (ইউ)-র সাংসদরা জানান, আসলে কুয়াশার জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর বিমান দেরিতে কলকাতায় পৌঁছয়। মমতারও ওই দিনই দিল্লিতে আসার কথা ছিল। ফলে দু’জনের বৈঠক হতে পারেনি। বৈঠক পরেও হতে পারে।
মাস তিনেক আগেও যাঁরা ছিলেন জোটসঙ্গী, সেই কংগ্রেসের সাংসদরা আজ সেন্ট্রাল হলে মমতাকে এক রকম এড়িয়েই গিয়েছেন। ইউপিএ থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার পর এ বারই প্রথম সংসদে এলেন মমতা। কিন্তু কংগ্রেসের সাংসদরা কেউই সে ভাবে আসেননি। কেবল কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমারের সঙ্গে মমতার কথা হয়েছে। |
|
|
|
|
|