উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মুক্তিনাথ চট্টোপাধ্যায় একই সঙ্গে চারুচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করতে পারবেন না বলে সোমবার রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। তাঁর জায়গায় কলেজের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিচার ইনচার্জ)-এর দায়িত্ব নেবেন কলেজের প্রবীণতম শিক্ষক।গত বছর জুলাইয়ে সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পান চারুচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মুক্তিনাথবাবু। সংসদ-প্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার পরেও অধ্যক্ষ-পদে ইস্তফা দেননি তিনি। এই নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। একই ব্যক্তি কী ভাবে একসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ এবং সংসদ-সভাপতি হতে পারেন, তথ্যের অধিকার আইনে রাজ্যের শিক্ষা অধিকর্তার কাছে তা জানতে চান এক ব্যক্তি। শিক্ষা অধিকর্তা আবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জানতে চান, কোনও কলেজের অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন ছুটিতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে কী করণীয়।
মুক্তিনাথবাবু একই সঙ্গে দু’টি পদে বহাল আছেন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন এক ব্যক্তি। তিনি আবেদনে বলেন, মুক্তিনাথবাবু একসঙ্গে ওই দু’টি পদে কাজ করতে পারেন না। সোমবার মামলার শুনানিতে আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ১০১ ধারায় বলা আছে, যদি কোনও অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন ছুটিতে থাকেন, তা হলে কলেজের প্রবীণতম শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে কলেজ চালাতে হবে।”
এ দিন মামলার শুনানির সময় বিভিন্ন তথ্য থেকে দেখা যায়, মুক্তিনাথবাবু সংসদের দায়িত্ব নেওয়ার পরে চারুচন্দ্র কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় দু’জনকে ইনচার্জ হিসেবে নিয়োগ করেন। এক জন শিক্ষা বিষয়ক কাজের দায়িত্ব পান। অন্য জন ভার পান প্রশাসনিক কাজকর্মের। ওই ইনচার্জরা মুক্তিনাথবাবুর নির্দেশ অনুসারেই কাজ করতেন এবং সেই সময় কলেজের প্রবীণতম শিক্ষককে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
হাইকোর্টের রায়ের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মুক্তিনাথবাবু জানান, প্রবীণতম শিক্ষককে এড়িয়ে কোনও কাজ হয়নি। তিনি বলেন, “যখন সংসদ-সভাপতির দায়িত্ব পাই, তখনই কলেজ-কর্তৃপক্ষের তরফে লিখিত নির্দেশে বলা হয়েছিল, উচ্চশিক্ষা দফতর বা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করব আমি। ইতিমধ্যে ওই দু’টি জায়গা থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি।”
তবে এখন হাইকোর্টের রায় মেনে নিয়ে কলেজের পরিচালন সমিতি তাঁকে যদি অধ্যক্ষ-পদ থেকে সরিয়ে দেয়, ব্যক্তিগত ভাবে তাতে তাঁর কোনও রকম আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দেন মুক্তিনাথবাবু। |