ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুটে আসছে। চার পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে তারই বন্ধুদের ছোট্ট দেহগুলো। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ক্লাসরুমটা। কোথায় পালাবে সে? কোথায় লুকোবে?
ছোট্ট মনে যে এত সাহস, এত বুদ্ধি, জানা ছিল না মায়ের। জানালেন, স্যান্ডি হুক স্কুলে যখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল বন্দুকধারী অ্যাডাম ল্যানজা, তাঁর ছ’বছরের মেয়েটা লুকিয়ে পড়েছিল বন্ধুদের আড়ালে। দৌড়ে পালাতে গেলেই যদি গুলি লেগে যায়, তাই মরে গিয়েছে ভান করে শুয়ে ছিল রক্তাক্ত দেহগুলোর মাঝে।
মেয়েকে ফিরে পেলেও সে দিনের আতঙ্ক কাটছে না কিছুতেই। শেষে মানসিক শান্তির খোঁজে স্থানীয় গির্জায় ফাদারের কাছে গিয়েছিলেন বাচ্চাটির মা। ঘটনাটা প্রকাশ্যে এল তখনই। ফাদার জিম সলোমন সাংবাদিকদের কাছে মেয়েটির গল্প করেন। ফার্স্ট গ্রেডের একমাত্র ওই বাচ্চাটিই সে দিন প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। তার ১৫ জন সহপাঠীই অ্যাডামের গুলিতে নিহত। শুক্রবার স্যান্ডি হুক স্কুল থেকে সেই প্রথম ছুটে বেরিয়ে এসেছিল।
একটা ছ’বছরের বাচ্চার পক্ষে সত্যিই কি সম্ভব এতটা সাহসী হওয়া?
বিতর্ক থাকলেও, মনোবিদদের একাংশ মনে করছেন, এত ছোট একটা বাচ্চার পক্ষে এতটা সাহস বা বুদ্ধির প্রকাশ, ভাবা যায় না! সে ক্ষেত্রে একেবারেই ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। তবে, এমনও হতে পারে, সে তার মায়ের কাছে এ রকম কোনও গল্প শুনেছিল, যা থেকে তার মাথায় হঠাৎ এমন বুদ্ধি আসে। আবার এ-ও সম্ভব, হয়তো সে প্রচণ্ড ভয়ে লুকিয়ে পড়ে ছিল মৃতদেহের ভিড়ে।
সন্তানহারা বাবা-মায়েদের সঙ্গে দেখা করতে গত কাল কানেক্টিকাটের স্কুলে হাজির হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বলেন, “আমরা কি ছেলেমেয়েদের যথেষ্ট নিরাপত্তা দিতে পারছি? সত্যি করে বললে, আমরা কিন্তু ব্যর্থ।” তবে এ সব কথা বলে যে সত্যিই জখম সারবে না, তা-ও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। ওবামার রাজত্বে এই নিয়ে চার বার বন্দুকবাজের হানা। তাঁর কথায়, “একের পর এক এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া অসম্ভব।” |