মাঝ-আকাশে আচমকাই বন্ধ হয়ে গেল বিদেশি বিমানের একটি ইঞ্জিন। বিমানটি তখন বঙ্গোপসাগরের মাথায়, ৩০ হাজার ফুট উপরে। পাইলট ক্যাপ্টেন আবাকভ সালাভাত রেডিও-বার্তায় কলকাতা বিমানবন্দরকে বললেন, “মে-ডে।” বিমান পরিবহণে এই ‘মে-ডে’কে চূড়ান্ত জরুরি অবস্থা বলে গণ্য করা হয়। কাজাখস্তানের ওই ফ্যালকন বিমানে তখন ১২ জন পর্যটক যাত্রী ছিলেন। পাইলটকে নিয়ে কর্মী ছিলেন ১০ জন। শেষ পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টা পরে একটি ইঞ্জিনের সাহায্যেই কলকাতায় নির্বিঘ্নে নামেন সালাভাত।
তার আগে এক ঘণ্টা ধরে চূড়ান্ত উৎকণ্ঠায় ছিল গোটা বিমানবন্দর। সোমবার সকাল সওয়া ৯টা নাগাদ বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এ সালাভাত জানান, বিমানের দু’টি ইঞ্জিনের মধ্যে বাঁ দিকেরটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কলকাতা থেকে বিমানটি তখনও প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূরের দক্ষিণ-পূর্ব আকাশে। বিমানবন্দরে উৎকণ্ঠার কারণ, জরুরি অবতরণের আগেই মাঝপথে বড়সড় অঘটন ঘটতে পারে।
কলকাতার এটিসি মনিটরে নজর রাখা শুরু হয় ওই বিমানের উপরে। জরুরি অবতরণের কথা ঘোষণা করে প্রস্তুত রাখা হয় অ্যাম্বুল্যান্স, দমকল-সহ যাবতীয় আপৎকালীন ব্যবস্থা। কলকাতা থেকে ওড়ার জন্য প্রস্তুত এমিরেটস বিমানকে অপেক্ষা করিয়ে ১০টা ১৪ মিনিটে একটি ইঞ্জিনে নির্বিঘ্নেই নামে কাজাখস্তানের বিমান।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বিমানটি কাজাখস্তানের ইনভেস্ত আভিয়া নামে এক সংস্থার। এক দল পর্যটক সেটি ভাড়া নিয়ে ব্যাঙ্কক গিয়েছিলেন। ফেরার পথে সোমবার সকালে বিমানটির নামার কথা ছিল লখনউয়ে। সেখানে তেল ভরে আবার উড়ান। যাত্রী ও কর্মীদের কারও ভারতে ঢোকার ভিসা নেই। কর্মীদের মধ্যে এক জন ইঞ্জিনিয়ারও ছিলেন।
কলকাতায় নামার পরে তিনি সাধ্যমতো চেষ্টা করেও বিমানটি সারাতে পারেননি। অগত্যা ভারত সরকারের বিশেষ অনুমতি নিয়ে যাত্রী ও কর্মীদের রাখা হয় শহরের একটি হোটেলে। পরে তাঁদের দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার ব্যাঙ্কক থেকে ইঞ্জিনিয়ার এসে বিমানটি সারালে সেটির কাজাখস্তান উড়ে যাওয়ার কথা। |