জয় বালাজির কর্তার হেনস্থায় বিরক্ত শিল্পমহল
য় বালাজির আধিকারিকের উপরে আক্রমণের তীব্র প্রতিক্রিয়া হল রাজ্যের অন্যতম প্রধান শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর ও আসানসোলে। প্রকাশ্যেই বিরক্তি প্রকাশ করলেন শিল্পপতিরা। বণিকসভা জানাল, যে কোনও অসন্তোষের ক্ষেত্রে সংযত থেকেই সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। দোষীদের কঠোর শাস্তির পক্ষে সওয়াল করছেন প্রত্যেকেই।
শনিবার রাতে দুর্গাপুরের বিধাননগরে আবাসন থেকে ডেকে মারধর করা হয় জয় বালাজির ইস্পাত কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (ইলেকট্রিক্যাল) অরুণ থাতৈকে। বিভিন্ন মহল থেকে তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র দিকে অভিযোগের আঙুল উঠলেও, কে বা কারা মুখে মাফলার চাপা দিয়ে ওই হামলা চালিয়েছিল তা এখনও নিশ্চিত নয়। পুলিশ অপরাধীদের খুঁজছে। জয় বালাজি অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। কিন্তু শিল্পমহল নিশ্চিন্ত হতে পারছে না।
বেঙ্গল সুবার্বান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল ঘোষের মতে, এই ধরণের ঘটনা শিল্পস্থাপন বা প্রসারের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। শিল্পায়নের স্বার্থে শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে ‘স্বাভাবিক সম্পর্ক’ বজায় রাখা জরুরি। তাঁর কথায়, “এই ঘটনাটি যে কারখানার, সেখানে শ্রমিকদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে। আবার কারখানা কর্তৃপক্ষেরও কিছু বলার আছে। আমরা চাই, শিল্পের স্বার্থে দু’পক্ষ বসে সমাধানসূত্র বের করুক। তা না হলে শিল্পায়নে বিরূপ প্রভাব পড়বে।”
শিল্পপতি তথা দুর্গাপুর অ্যাসোসিয়েশন অফ স্মল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সমীর বসুর বক্তব্য, “ওই কারখানা নিয়ে অনেক অভাব-অভিযোগ আছে। কিন্তু সেটা অন্য বিষয়। যাঁকে মারা হয়েছে তিনি তো আর মালিক নন, বেতনভূক কর্মচারী মাত্র। ওঁর উপরে গায়ের ঝাল মিটিয়ে লাভ কী? এ রকম চলতে থাকলে এ রাজ্যে শিল্পের গতি রুদ্ধ হয়ে যাবে।” দুর্গাপুর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক হরপ্রসাদ ঘোষাল মনে করেন, কারখানায় শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকবেই। কিন্তু তা যেন সৌজন্যের সীমা না ছাড়ায়। তাঁর মতে, “ব্যবসায়ী বা শিল্পপতিরা স্বচ্ছন্দে ব্যবসা করতে না পারলে দেশের উন্নতি থমকে যায়। শিল্পবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে পারলে তবেই উন্নতি হবে।”
দুর্গাপুরের এই ঘটনার আঁচ তাঁদের শহরেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে আসানসোলের বণিক সংগঠনগুলি। ওই শিল্পাঞ্চলের অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক বিকাশের লক্ষ্যে ডিসেম্বরের শেষে তাঁরা ১০ দিনের শিল্পমেলা করতে চলেছেন জানিয়ে আসানসোল চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি সুব্রত দত্ত বলেন, “দেশ-বিদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপতিরাও এই মেলায় আসছেন। দুর্গাপুরের এই ঘটনা তাঁদের কাছে নেতিবাচক বার্তা নিয়ে যাবে। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ করা জরুরি।” দক্ষিণবঙ্গের আটটি জেলার শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ফেডারেশন অফ সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানের মতে, এক সময়ে ‘ভারতের রূঢ়’ বলে পরিচিত এই শিল্পাঞ্চল এমনিতেই অর্থনৈতিক দিক দিয়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। বিভিন্ন বণিক সংগঠনের তরফে একাধিক শিল্পপতিকে এলাকায় এনে শিল্প পত্তনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু এ রকম বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা সেই উদ্যোগে জল ঢেলে দিচ্ছে। রাজেন্দ্রপ্রসাদবাবু এখন দিল্লিতে কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের সর্বভারতীয় সম্মেলনে রয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি বলেন, “আমি গোটা বিষয়টি শুনেছি। মঙ্গলবার আমাদের একটি প্রতিনিধি দল দিল্লিতে তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে দেখা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.