নিয়ম ভাঙায় এগিয়ে কারা |
• মালদহ মেডিক্যাল কলেজ
• বালুরঘাট হাসপাতাল
• দার্জিলিং হাসপাতাল
• জলপাইগুড়ি হাসপাতাল
• বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ
• এসএসকেএম
• নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ
|
(সূত্র-রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর) |
|
স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, এতেই মৌচাকে ঢিল পড়েছে। নতুন পদ্ধতিতে সংস্থাগুলির সঙ্গে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ কমছে। অভিযোগ, আটকে যাচ্ছে বরাত পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা আদায়ের পুরনো প্রক্রিয়াও। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, ওষুধ খাতে পাওনা মেটানোর জন্য দফতর থেকে বিভিন্ন হাসপাতালকে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারা সেই টাকা সরবরাহকারী সংস্থাগুলিকে মেটাচ্ছে না। এমনকী বিল পাওয়ার পরে তা ‘রিসিভও’ করা হচ্ছে না। ফলে সেই সংস্থাও পরবর্তী দফার ওষুধ পাঠাচ্ছে না। হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে ওষুধ-সঙ্কট। তাঁর কথায়, “নতুন প্রক্রিয়ায় ওষুধ সংস্থার সঙ্গে আঁতাতের সুযোগ নেই। তাই পাওনা আটকে তাদের কোণঠাসা করা হচ্ছে। আর অন্য প্রকল্প থেকে টাকা কেটে স্থানীয় স্তরে (লোকাল পারচেজ) ওষুধ কিনছে বহু হাসপাতাল। এই লোকাল পারচেজ-এর ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে ‘কাটমানি’ প্রথা। ফলে আপোস চলছে মানের সঙ্গে।” স্বাস্থ্যকর্তাদের হিসেব অনুযায়ী, ওষুধ খাতে রাজ্য স্বাস্থ্য বাজেটে যত টাকা বরাদ্দ, তার ২০% যায় ‘কাটমানি’তে।
ইতিমধ্যেই কলকাতা ও জেলার কিছু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের কর্তারা জানান, রোগীদের যাতে বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে না হয়, সে জন্য সবর্দা চিকিৎসকদের বলা হয় যাতে তারা স্টোরে রাখা ওষুধই প্রেসক্রাইব করেন। ওষুধের মান যাচাইয়ের জন্য ৫০টি বেসরকারি ল্যাবরেটরিরও সাহায্য নেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, “এটা নিয়ে বৈঠক করছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে, ভবিষ্যতে এমন হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওষুধ কেনার নতুন প্রক্রিয়ায় আর একটি নিয়ম অনেক হাসপাতালই মানছে না বলে দফতর সূত্রের খবর। তা হল ‘সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট’। কবে ওষুধ অর্ডার দিলে কত দিন পরে তা পাওয়া যাবে, সে সম্পর্কে ধারণা নেই বহু হাসপাতালের। তাই ওষুধ, স্যালাইন, ইঞ্জেকশন প্রায় শেষ হওয়ার পরে তারা অর্ডার দিচ্ছেন। ফলে সে সব আসতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। মাঝখানের সময়টা ওষুধশূন্য থাকছে হাসপাতাল। ভুগছেন রোগীরা। আবার কোনও কোনও সময়ে সরবরাহকারী সংস্থাগুলিও মওকা বুঝে ইচ্ছাকৃত দেরি করছে। তাদের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। নিয়ম হয়েছে ট্যাবলেটের ক্ষেত্রে ১০ , ইঞ্জেকশনের ক্ষেত্রে ৩০ এবং স্যালাইনের ক্ষেত্রে ৪৫ দিন সময় দেওয়া হবে। তা না মানলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী পাঁচ বছর তারা আর সরকারি বরাত পাবে না।
হাসপাতালগুলি অবশ্য অভিযোগ মানেনি। এসএসকেএম, নীলরতন সরকার, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ, বালুরঘাট, জলপাইগুড়ি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষরা জানান, নতুন প্রক্রিয়া বুঝে উঠতে পারেননি, তাই কিছু কিছু সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যে অভিসন্ধি নেই। নতুন প্রক্রিয়া বুঝতে না পারার বিষয়টি তাঁরা স্বাস্থ্য ভবনে জানিয়েছেন কি না, জানতে চাওয়া হলে সকলেই স্বীকার করেছেন, তাঁরা জানাননি। |