যুবভারতী-কাণ্ডে পুলিশেরই পাশে দাঁড়ালেন মমতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ত্রিফলা-বিতর্কে তিনি কলকাতা পুরসভার মেয়রের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ বার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে হাঙ্গামায় পুলিশের ভূমিকাকেও কার্যত সমর্থন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতার পুরসভায় ত্রিফলা আলো কেনাকে কেন্দ্র করে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত হয়েছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। কিন্তু মেয়রকে সমর্থন করে মুখ্যমন্ত্রী বুধবার রবীন্দ্র সরোবরের একটি অনুষ্ঠানে জানান, তাঁরই পরামর্শে ত্রিফলা আলো লাগানোর বরাত ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। ওই কাজে আদৌ কোনও অনিয়ম হয়নি বলে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি। রবিবার যুবভারতীর বড় ম্যাচে বিশৃঙ্খল জনতাকে থামাতে তাদের ছোড়া ইট ফের তাদের দিকেই ছুড়ে মারা এবং তাদের উপরে লাঠি চালানোর ঘটনাতেও পুলিশের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সায়েন্স সিটিতে কলকাতা পুলিশের এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে হঠাৎই যুবভারতীর গোলমালের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “খেলার মাঠে এক লক্ষ লোক। পুলিশ কী করবে?”
যুবভারতীতে দর্শকদের শান্ত করতে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। টিভিতে দেখা গিয়েছে, দর্শকদের ছোড়া ইট কুড়িয়ে পুলিশ পাল্টা তাদের দিকেই ছুড়ে মারছে। দর্শকদের ছোড়া ইটে অনেক পুলিশকর্মী জখম হন বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজীবেরও (বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার) তো মাথা ফেটেছে।” পুলিশের সব কাজই খারাপ নয় বলে মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রী জুড়ে দেন, “আবার এটাও বলব না, সব ভাল। লোবায় গুলি চালানো আমার পছন্দ হয়নি। আমি তা বলেও দিয়েছি।” |
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী পুলিশের পাশে দাঁড়ালেন। আবার একই দিনে বিধানসভায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কংগ্রেসের আনা একটি প্রস্তাব খারিজ করে দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তার প্রতিবাদে কংগ্রেস বিধানসভা থেকে ওয়াক-আউট করে।
বিধানসভায় এ দিন অধিবেশনের শুরুতে রবিশঙ্করের প্রয়াণে শোকপ্রস্তাব পাঠ ও নীরবতা পালন করা হয়। তার পরে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অভিযোগ করেন, তাঁদের প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হল। তিনি বলেন, “স্পিকারের পরামর্শে প্রস্তাব থেকে একটি শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে। তার পরেও প্রস্তাব খারিজ হল।” স্পিকার বলেন, “পদ্ধতি মেনে প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়নি।” স্পিকারের রুলিং-এর পরেই কংগ্রেস বিধায়কেরা কাগজপত্র ছুড়ে ফেলে কক্ষত্যাগ করেন।
সোহরাব এবং মানস ভুঁইয়ার অভিযোগ, বিধানসভার বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি নিয়ে বক্তব্য পেশের সময় স্পিকার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও ভোটাভুটি হবে না। তাঁর পরামর্শ মেনে নিয়ে ১৯৪ ধারায় প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়। তার পরেও তা খারিজ করা হয়েছে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটিতে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে যে-কোনও প্রস্তাব সভার সম্পদ হয়ে যায়। ওই কমিটির আর কিছু বলার থাকে না।” তবে কংগ্রেস বিধায়কদের অভিযোগ, “বিধানসভায় বেসরকারি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার দিন বিরোধীদের কোনও প্রস্তাব নেই এটা আগে শোনা যায়নি। বাম আমলে মাঝেমধ্যে সভা পরিচালনার সময় দলতন্ত্র কায়েম হতে দেখা যেত। কিন্তু এ দিন যা ঘটল, আগে তা হয়নি।” |