শিখা সাসপেন্ড কেন, প্রশ্ন সোমেনের |
মমতা-শোভনদেব বৈঠক, তবু জট কাটল না তৃণমূলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও নয়াদিল্লি |
অবশেষে শোভনদেব-বিতর্কে হস্তক্ষেপ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিধায়ক শিখা মিত্রের সাসপেন্ড হওয়া নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধল তৃণমূলে। শিখাদেবীকে কেন সাসপেন্ড করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর স্বামী তৃণমূল সাংসদ সোমেন মিত্র।
কালীঘাটে মমতার বাড়িতে অপেক্ষা করেও তাঁর দেখা পাননি শোভনদেব। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কক্ষে তিনি দলনেত্রীর দেখা পেলেন। তার পরেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ বলল, সমস্যা মিটে গিয়েছে। যদিও শোভনদেব-ঘনিষ্ঠদের দাবি, মেটেনি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দলেরই এক গোষ্ঠীর নেতার হাতে নিগ্রহের ঘটনার নিন্দা করতে হবে বলে তাঁদের যে দাবি ছিল, তা নিয়ে এ দিন মমতা একটি কথাও বলেননি বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর। বৈঠকের পরে অবশ্য শোভনদেব বা তৃণমূলের কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। দলের এক নেতার কথায়, “দলনেত্রী শোভনদার সাংগঠনিক কাজের প্রশংসা করেছেন। তবে দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে নিষেধ করেছেন।” দল নিগ্রহের নিন্দা না করায় শোভনদেবের অনুগামীরা অবশ্য ক্ষুব্ধই রয়েছেন।
অন্য দিকে, চৌরঙ্গির বিধায়ক শিখাদেবীর সাসপেনশনের কথা তৃণমূলের কোনও পদাধিকারী আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেননি। ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও তিনি সাসপেনশনের চিঠি পাননি। শিখাদেবী বলেন, “আমি সাসপেনশনের চিঠির অপেক্ষায় রয়েছি। চিঠি পেতে কেন দেরি হচ্ছে বুঝতে পারছি না। তাড়াতাড়ি চিঠি পেলে মুক্ত বিহঙ্গ হব। আমি তো মূক-বধির নই। চিঠি পাওয়ার পর যা বলার বলব।” বিধানসভায় মঙ্গলবার যা ঘটেছে, তার প্রতিবাদ করেছিলেন শিখাদেবী। সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কার্যত শিখাদেবীকেই সমর্থন করে সোমেনবাবু বলেন, “বিধানসভায় এ সব হওয়া উচিত নয়। আমি সাত বার বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছিলাম। অনেক ঘটনা দেখেছি। কিন্তু বিধানসভার মেঝেতে ফেলে কাউকে পেটানোর ঘটনা দেখিনি।”
স্ত্রী-র সাসপেনশন প্রসঙ্গে সোমেনবাবু বলেন, “কীসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে, তা এখনও অজানা।” রাজ্যে বিভিন্ন নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্স কোম্পানি (এনবিএফসি) নিয়ে এ দিন উদ্বেগ প্রকাশ করেন সোমেনবাবু। ওই ধরনের কোম্পানির ফাঁদে পড়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি নিয়ে বামেরা মঙ্গলবার বিধানসভায় মুলতবি প্রস্তাব আনতে চেয়েছিলেন। সোমেনবাবু জানান, এ বিষয়ে কেন্দ্র কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা নিয়ে একাধিক বার লোকসভায় প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রীকেও টেলিফোনে উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। এর পর তো গরিব মানুষ মারা যাবে। মৃত্যুর মিছিল হবে!” |