ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনই সার, হতাশ পরীক্ষার্থীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ঢাকুরিয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে টানা পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন কসবার অদিতি বসু। ফর্ম তোলার পরে তা জমা দেওয়ার দিনে আরও ঘণ্টা আড়াই লম্বা লাইনে ধৈর্যের পরীক্ষা। মামলার জেরে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাটাই এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় মাথায় হাত সেই তরুণীর।
হাওড়ার বালির প্রতীক ঘোষ বা হুগলির মাখলার অদিতি পালের দশাও একই। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের পরে তাঁরা কেউ জানেন না, কবে পরীক্ষায় বসতে পারবেন তাঁরা। এর জন্য রাজ্য সরকারকেই দুষছেন প্রতীক-অদিতিরা।
প্রতীক বলেন, “শুনেছি, আগে যাঁদের নাম প্যানেলে ছিল তাঁরাই এখনও নিয়োগপত্র পাননি। তা হলে তড়িঘড়ি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে ফর্ম বিলি করা হল কেন?” তাঁর দাবি, সবার ভবিষ্যতের কথা ভেবেই সরকার সমস্যাটির দ্রুত সমাধান করুক। মাখলার অদিতিও বলছেন, “বইপত্র কিনে পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলাম। এখন সব কিছুই ভণ্ডুল।” |
আগের ঘোষণা অনুযায়ী, পরীক্ষার দিন নির্দিষ্ট হয়েছিল ২৩ ডিসেম্বর। রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে ফর্ম বিলি করা হয়। তার পরে শেষ মুহূর্তে পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় অথৈ জলে পড়েছেন ৫৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী।
দিন ১৫ আগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে উত্তরপাড়ার জয়কৃষ্ণ গ্রন্থাগার থেকে পরীক্ষার ফর্ম তোলেন অদিতি। আর বালির প্রতীকের প্রৌঢ় বাবা ভোর সাড়ে পাঁচটায় ইউকো ব্যাঙ্কের বালি শাখায় ছেলের জন্য ফর্ম তুলতে লাইন দিয়েছিলেন। প্রতীক নিজে সকাল আটটায় লাইনে দাঁড়িয়ে আরও দু’ঘণ্টা বাদে ফর্ম হাতে পান। ক্ষুব্ধ প্রতীক-অদিতিরা একবাক্যে বলছেন, “রাজ্য সরকারের জন্যই আমাদের এই হাল। সব কাজ বন্ধ রেখে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এখন কী করব জানি না!”
হতাশ উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটির সায়ন্ত দে, বেলঘরিয়ার সৌরভ রায়ও। ওঁরা দু’জনেই ফর্ম তুলেছিলেন বেলঘরিয়া কালচার মোড়ের সর্বশিক্ষা মিশনের দফতর থেকে। ফর্ম তোলার সময় প্রায় ছ’ঘণ্টা এবং জমা দেওয়ার সময় পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হয়েছিল। সায়ন্ত বলছিলেন, “আগের বারও ফর্ম জমা দেওয়ার পরে পরীক্ষার কিছু দিন আগে জানানো হয়, আমাদের জেলায় পরীক্ষা বাতিল।” দৃশ্যত বিভ্রান্ত সৌরভ বলেন, “কী যে করব, কিচ্ছু বুঝতে পারছি না!” |