কোর্টের রায়ের জের
প্রাথমিকে বাড়তি ভার বইতেই হবে, আশঙ্কা শিক্ষকদের
শিক্ষকের অভাবে এক এক জনের উপরে চাপছে মাত্রাতিরিক্ত পড়ুয়াকে পড়ানোর ভার। যার ফলে রাজ্যের বেশির ভাগ প্রাথমিক স্কুলে ব্যাহত হচ্ছে পড়াশোনা। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ায় এই সমস্যা আরও প্রকট হবে বলেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে শিক্ষকমহলে। এবং স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের একাংশের মনেও।
শিক্ষার অধিকার আইন মেনে ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে যে অনুপাত থাকা উচিত, তা এ রাজ্যে নেই। তার ফলে এক এক জন শিক্ষকের উপরে রয়েছে বাড়তি চাপ। সেই চাপ সরার যে আশু সম্ভাবনা নেই, সে কথা মেনে নিল শিক্ষকমহল। পাশাপাশি স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, স্কুলশিক্ষা দফতর বা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলিকে কার্যত এড়িয়ে গিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার যাবতীয় কাজ করছে বলেই জটিলতা তৈরি হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ দিন তিনি বলেন, “রায়ের বিষয়ে আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।”
স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, এত দিন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কেবল নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দিত। পরে পর্ষদের নির্দেশিকা মেনে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পৃথক প্রশ্নে পরীক্ষা নিয়ে নির্বাচিতদের তালিকা তৈরি করত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলি। সেই তালিকা অনুমোদন করত স্কুলশিক্ষা ডিরেক্টরেট।
কিন্তু এ বছর শিক্ষা সংসদগুলিকে বাদ দিয়ে পর্ষদই গোটা প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে বলে স্থির হয়। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ অবশ্য বলছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গতি আনতেই কেন্দ্রীভূত পদ্ধতিতে পরীক্ষা পরিচালনার সিদ্ধান্ত। পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য গত সপ্তাহেই বলেন, “একই দিনে রাজ্য জুড়ে ৫৫ লক্ষ প্রার্থীর পরীক্ষা নেবে পর্ষদ।”
কেন্দ্রীয় শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, প্রাথমিকে ৩০ জন ছাত্র পিছু এক জন শিক্ষক থাকা বাধ্যতামূলক। এই অনুপাত এখনই গড়ে ১:৩৯। এর পরে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশে নিয়োগ আরও পিছিয়ে গেল। তার উপরে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাক-প্রাথমিকেও ছাত্রভর্তি শুরু হবে। তখন তো শিক্ষকের অভাব আরও প্রকট হবে। আইনজীবী মহল মনে করছেন, মামলার নিষ্পত্তি হতে কম করেও বছর দুয়েক। তখন রাজ্য কী করবে?
স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “অত সময় লাগবে না। ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সব মিটমাট হয়ে পরীক্ষা হবে।” দফতর সূত্রের খবর, স্থগিতাদেশের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আগামী ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে আবেদন জানাবে রাজ্য। এত অল্প সময়ের মধ্যে কী করে সেই মামলার নিষ্পত্তি হবে, সে প্রশ্নের উত্তর নেই ওই কর্তার কাছে। প্রাক্তন স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী পার্থ দে এ দিন বলেন, “সরকারের উচিত এ নিয়ে আর মামলা না লড়ে নিয়ম মেনে নিয়োগ শুরু করা।”
এনসিটিই-র নিয়ম না মানায় ২০০৬ সালে এ রাজ্যের ১২৪টি প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের (পিটিটিআই) অনুমোদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। পিটিটিআই ছাত্রছাত্রীদের তরফে আন্দোলনের অন্যতম নেতা, বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী পিন্টু পাড়ুই বলেন, “প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দিয়ে বাকিদের নিয়োগ করার কথা পর্ষদ কর্তৃপক্ষকে বোঝানো হয়েছিল। কিন্তু মানিকবাবু আমাদের কথাকে পাত্তাই দিলেন না।”
যাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ, সেই পর্ষদ-সভাপতি অবশ্য এ দিন কিছু বলতে চাননি। তাঁর কথায়, “আমি কলকাতা থেকে অনেক দূরে, বালুরঘাটে। আমি কিছু জানি না। অন্য কাউকে জিজ্ঞাসা করুন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.