সবার কাছেই রয়েছে। তা সত্ত্বেও ভারতীয় ড্রেসিং রুম থেকে একটা মালিকহীন ‘ক্যাপ’ বেরোল। টেস্ট ক্যাপ। কেউ না কেউ যে এই টুপি পাবেনই, এমন আভাস ছিলই। কিন্তু তিনি কে, এটাই ছিল আসল প্রশ্ন।
ভারত অধিনায়ক টস করতে যাওয়ার আগেই সেটা ঠিক হয়। টসের আগে যখন দেখা গেল, পীযূষ চাওলা- রবীন্দ্র জাডেজারা জমিয়ে প্র্যাক্টিস করছেন আর অশোক দিন্দা প্রায় অদৃশ্য, তখনই বোঝা গেল, এ বারেও তাঁকে ভারতীয় দলের পর্যটক তথা জলবহনকারী হিসেবেই থেকে যেতে হবে। শেষ পর্যন্ত তা-ই হল। অতিরিক্ত টেস্ট ক্যাপটি যখন জাডেজার হাতে তুলে দিলেন সচিন তেন্ডুলকর, তখন সেদিকে উদাস নয়নে তাকিয়ে নৈছনপুর এক্সপ্রেস। মুখে হাসি টেনে জাডেজাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁকে বলতেই হল ‘অল দ্য বেস্ট’। কিছুক্ষণের মধ্যেই টুইটারে অবাঙালি ক্রিকেটপ্রেমীর পোস্ট: “মনোজ তিওয়ারি ও অশোক দিন্দারা সিএসকে-তে না গেলে বোধহয় ওদের জন্য ভারতীয় দলের দরজা খুলবে না।”
সকাল সাড়ে ন’টা বাজার আগেই আম্পায়াররা মাঠে নেমে পড়েছেন। টস হেরে ফিল্ডিং করার জন্য ভারতীয় দলও তৈরি। দেখা গেল, সবার আগে মাঠে পা রাখলেন বঙ্গসন্তানই। দলের অন্যদের যাওয়ার সময় আবার যে বলতে হয়, ‘অল দ্য বেস্ট’। বুকে পাথর রেখে তাও করলেন দিন্দা। কবে তাঁকে কেউ এ ভাবে শুভেচ্ছা জানাবে, কে জানে। |
এ দিন ইশান্ত পাঁচটি স্পেলে ১৯ ওভার বল করে সাতটি মেডেন ও দু’টি উইকেট নেন। কেভিন পিটারসেন খেলার শেষে বলতে বাধ্য হলেন, “ইশান্তকে খেলা সবচেয়ে কঠিন হয়ে উঠেছিল।” একা ইশান্তেই এই। অনেকেই মনে করছেন, দিন্দা থাকলে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা আরও চাপে পড়ে যেতেন। ভারতীয় দলের এই সিদ্ধান্তে অবাক কেপি-ও। বললেন, “বুঝলাম না, কেন ওরা আর একজন সিমার খেলাল না।” ব্যাখ্যাটা দেওয়ার চেষ্টা করলেন রবীন্দ্র জাডেজা। বললেন, “সম্ভবত পরের দিকে উইকেট ভাঙবে। স্পিনাররা সাহায্য পাবে এই কথা ভেবেই একজন পেসার রাখা হয়েছে।”
তিন স্পিনারে খেলবে ভারত। সঙ্গে আবার জাডেজা। খবরটা পেয়েই প্রেসবক্সে অনেকে চমকে উঠলেন। আত্মহত্যার চেষ্টা! এই উইকেটে একা ইশান্তের ওপর পেস আক্রমণের দায়িত্ব ছাড়া মানে তো প্রায় তাই। খবরটা পেয়ে স্যর জিওফ্রে বয়কট বললেন, “আশা করি ছেলেটা ভেঙে পড়বে না।” কার সম্পর্কে বললেন, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। অশোক দিন্দা, ভারতীয় ক্রিকেট দলের দ্বাদশ ব্যক্তি। শুরুতে ইশান্ত ১৬ রানের মধ্যে কুক ও কম্পটনকে ফিরিয়ে দিতে হাহাকারটা আরও জোরাল হল। ছটফট করতে থাকা ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের দেখে লাঞ্চে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় টিভি বক্সে বসে বলছিলেন, “দুই স্পিনারের সঙ্গে জাডেজাকে নিলে না হয় বুঝতাম। কিন্তু তিন স্পিনারের সঙ্গে আবার জাডেজা? ব্যাপারটা ঠিক বোঝা গেল না।” পরে কমেন্ট্রি বক্সের বাইরে দিন্দা প্রসঙ্গ তোলায় প্রায় বিরক্ত হয়েই বললেন, “খেলাবে না তো কী হবে? এই উইকেটে দিন্দা কার্যকর হয়ে উঠতে পারত।”
মনোজ, ঋদ্ধির পর এ বার বাংলার আর এক প্রতিভাকে কি টার্গেট করে বসে রয়েছেন কলকাতার জামাই? এ দিনের পর এমন প্রশ্ন না ওঠার কোনও কারণ নেই। |