অখুশি শিল্পমহল
সরকারি জমি বণ্টনে নিলামের নীতি রাজ্যে
শিল্পের জন্য সরকারি জমি পেতে এ বার প্রতিযোগিতায় নামতে হবে লগ্নিকারীদের। বৃহস্পতিবার সরকারি জমি বণ্টনের নতুন নীতি অনুমোদন করেছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। বৈঠকের পরে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, বাণিজ্যিক প্রকল্পের জন্য জমি দেওয়া হবে নিলাম করে। আর শিল্পের ক্ষেত্রে আগ্রহী সংস্থাগুলির সুনাম, প্রকল্পের সম্ভাব্যতা ইত্যাদি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি জমি থেকে সরকার যাতে সর্বোচ্চ মূল্য পেতে পারে তা-ও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।
এই সিদ্ধান্তে শিল্পমহলের একটা বড় অংশ অখুশি হলেও সরকারের এক মুখপাত্র এ দিন বলেন, সম্প্রতি টুজি স্পেকট্রাম মামলায় প্রাকৃতিক সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে মূলত নিলামই যুক্তিযুক্ত বলে মত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করে। ওই মুখপাত্রের কথায়, “পশ্চিমবঙ্গে প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ পদার্থের সম্ভার খুবই কম। প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে সরকারের হাতে যা আছে, তা হল জমি। তাই জমি বণ্টন নিয়েই নতুন নীতি তৈরি করল রাজ্য।”
এ দিন অনুমোদিত নতুন নীতির নাম ‘ল্যান্ড অ্যালটমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট গাইডলাইন পলিসি’। এই নীতি অনুযায়ী সরকারি কোনও জমিই আর বাম আমলের মতো সরাসরি বিক্রি (ফ্রি হোল্ড) করা হবে না। বণ্টন করা হবে লিজ-এর ভিত্তিতে। লিজ-এ পাওয়া সেই জমি হস্তান্তর করতে হলে সরকারের অনুমতি বাধ্যতামূলক।
পার্থবাবু বলেন, “বাণিজ্যিক কাজের জন্য এ বার থেকে নিলামের মাধ্যমে সরকারি জমি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, হাসপাতাল, স্কুল, গরিব মানুষের জন্য আবাসন বা সমবায়ের ভিত্তিতে আবাসনের মতো জনহিতকর কাজে কেউ বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখালে সেই প্রস্তাব রাজ্য মন্ত্রিসভার কোর কমিটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।” আর শিল্পের জন্য জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দাম পাওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট, কর্মসংস্থানের সুযোগ, লগ্নির পরিমাণ এবং সংস্থার সুনামের দিকগুলি মাথায় রাখা হবে।
কিন্তু সরকারের এই নতুন নীতিতে শিল্পমহলের একটি অংশ বিস্মিত। তাদের মতে, এমনিতেই শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করবে না সরকার। তার উপর যদি লগ্নিকারীদের নিলামে সরকারি জমি কিনতে হয়, তা হলে জটিলতা বাড়বে ছাড়া কমবে না। ফলে শিল্পায়ন প্রক্রিয়া আরও ধাক্কা খাবে বলেই তারা মনে করছে। শিল্পমহলের এই অংশের বক্তব্য, বড় শিল্প করার মতো এক লপ্তে জমি সরকারের কাছে নেই। এই অবস্থায় সরকারের নতুন নীতি ছোট ও মাঝারি শিল্পপতিদের জমি পাওয়ার সম্ভাবনাও কমাবে।
এ দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইটিসি-সহ ১৪টি শিল্প সংস্থাকে জমি দেওয়ার বিষয়টিও চূড়ান্ত করেছে রাজ্য সরকার। ওই সংস্থাগুলি শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের কাছে জমি চেয়ে আবেদন করেছিল। শিল্পমন্ত্রী জানান, আইটিসি-কে হাওড়ার সাঁকরাইলে ৪০ একর, পাঁচলায় ৩৯ একর এবং রাজারহাটে ১৫ একর জমি দেওয়া হয়েছে। কল্যাণীতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউশন অফ ইনফরমেশন টেকনোলজিকে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার জন্য ১০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দফতরের মধ্যে জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় গতি আনতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান শিল্পমন্ত্রী পার্থবাবু।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.