|
|
|
|
বিনোদন |
দুই বাংলাকে বিনোদনের সেতুতে বাঁধছে ফিকি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
|
শুধু ‘অশনি-সঙ্কেত’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ বা ‘মনের মানুষ’ নয়! দুই বাংলার শিল্পী-কলাকুশলী-প্রযোজকদের গাঁটছড়ায় আর একটি বক্স অফিস কাঁপানো ‘সপ্তপদী’ই বা গড়ে উঠবে না কেন?
প্রশ্ন নয়। এটা ভবিষ্যতের একটা লক্ষ্য। এবং এটাকে সামনে রেখেই আগামী সপ্তাহে কলকাতায় বিনোদন শিল্প বিষয়ক সম্মেলনে সামিল হচ্ছে বণিকসভা ফিকি। সেখানে এ-পার ও-পারের বাংলাভাষী জনতার কাছে সিনেমা, টেলিভিশন, সঙ্গীতের মতো নানা ধরনের বিনোদন অবাধে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা হবে। বৃহস্পতিবার জানালেন ফিকি-র প্রচারমাধ্যম ও বিনোদন শাখার প্রধান লীনা জয়সানি।
পূর্ব ভারতের বিনোদন শিল্প সংক্রান্ত এই সম্মেলনের এটা দ্বিতীয় বছর। বাংলাদেশের তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সেখানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানান উদ্যোক্তারা। আমন্ত্রিত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মুম্বই ও দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রসারে ১৫ বছর ধরে কাজ করছে ফিকি। পূর্ব ভারত তথা বাংলার বিনোদনের জন্য ফিকি-র সহায়তায় এমন মঞ্চ বড় প্রাপ্তি বলে মনে করেন সম্মেলনের আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ। তাঁর কথায়, “বাঙালি বিশ্বের অন্যতম বড় ভাষাভাষী গোষ্ঠী। তাদের জন্য বিনোদনের অখণ্ড বাজার ধরাটাও তাই জরুরি।”
|
সাংবাদিক বৈঠকে প্রসেনজিৎ এবং ঋতুপর্ণ।—নিজস্ব চিত্র |
একই সুর চিত্রপরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের। তাঁর মতে, “বিনোদনের প্রসারে ভারত ও বাংলাদেশে নানা আমলাতান্ত্রিক বাধা দূর করতে পারে এই সম্মেলন।” আলাদা দেশ হয়েও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পরে দুই বাংলা কী ভাবে এক সমাজ হয়ে উঠেছিল, সেই সদ্য অভিজ্ঞতা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ঋতুপর্ণ। সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশের বাইরের বৃহত্তর বাংলাভাষী গোষ্ঠীর কাছেও বাংলা বিনোদন শিল্পকে পৌঁছে দেওয়া দরকার।
উদ্যোক্তারা জানান, যুগ্ম ভাবে দুই বাংলার চলচ্চিত্র প্রযোজনা থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের নানা দিক উঠে আসবে কলকাতার সম্মেলনে। থাকবেন মুম্বইয়ের চলচ্চিত্র জগতের পরিচিত মুখ এবং পূর্ব ও উত্তর-ভারতের সাংস্কৃতিক জগতের প্রতিনিধিরাও। গোটা পূর্ব ভারতের বিনোদন শিল্প বিষয়ে ফিকি-র রিপোর্টও প্রকাশিত হবে।
এই ধরনের সম্মেলন বিনোদন শিল্পের বিপণনের নানা দিক খুলে দেবে বলে আশা করেন উষা উত্থুপ। তাঁর কথায়, “সিনেমা বা সঙ্গীতের ব্যবসা ভাল হলেই উৎকর্ষ বাড়বে। নইলে কিছুই হবে না।” প্রসেনজিতের দাবি, সিনেমার পাইরেসি বা নকলের বিপদ এড়াতে রাজ্য সরকারকে চাপ দেওয়ার কাজটাও গত বার এই সম্মেলনের মঞ্চ থেকে শুরু হয়েছিল। তাঁর আশা, এই নকলবাজির মোকাবিলায় মহারাষ্ট্রের মতো পশ্চিমবঙ্গ সরকারও শীঘ্রই কড়া আইন চালু করবে।
গত বারের সম্মেলন উপলক্ষে কলকাতায় এসেছিলেন যশ চোপড়া। মুম্বইয়ের এই সদ্যপ্রয়াত পরিচালকের নামে একটি ‘ফেলোশিপ’ চালু করার কথা এ দিন ঘোষণা করেছে ফিকি। গোটা দেশ থেকে বাছাই করা কয়েক জন সম্ভাবনাময় চিত্রনাট্যকারকে কয়েক মাস ধরে তালিম দেবেন বিনোদন জগতের খ্যাতনামারা। সেই সঙ্গে নবীন চিত্রনাট্যকারদের চিত্রনাট্য নামী চিত্রপরিচালকদের কাছে পৌঁছেও দেওয়া হবে।
কলকাতার সম্মেলনে স্থানীয় প্রতিভাদের সৃষ্টিশীলতা শাণিত করার এক গুচ্ছ কর্মসূচি থাকছে। থাকছে ডিজিটাল ফিল্ম তৈরি এবং মুম্বইয়ের নামী চিত্রনাট্যকার আঞ্জুম রাজাবলীর তত্ত্বাবধানে চিত্রনাট্য লিখতে শেখার কর্মশালা। সেই সব কর্মসূচি শুধু সম্মেলনেই শেষ হয়ে যাবে না। সারা বছর ধরেই এই ধরনের উদ্যোগ চালু থাকবে বলে জানিয়েছে ফিকি। |
|
|
|
|
|