জিতের সঙ্গে ও টি-তে |
বাবা হলেন জিৎ। পরিবারের সঙ্গে সেখানে হাজির একমাত্র
আনন্দ প্লাস। কমেন্ট্রি দিচ্ছেন ইন্দ্রনীল রায় |
ভাগীরথী নেওটিয়া হসপিটাল।
১২.১২.১২
বেলা ৮টা ৪৮ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড।
ঠিক এই মুহূর্তেই জীবনটা বদলে গেল জিতের। বাবা হলেন ফুটফুটে এক কন্যার।
আর অপারেশন থিয়েটারের বাইরে উপস্থিত একমাত্র আনন্দ প্লাস। |
ডাক্তারের পোশাকে অপারেশন থিয়েটারে |
হাসপাতাল জুড়ে তখন সবাই উত্তেজিত। “এই জিতের বাচ্চা হবে জানিস,” লিফটম্যান বলছেন ওয়ার্ডবয়কে। হাসপাতালে পৌঁছেই জিতকে দেখা গেল ডাক্তারের পোশাকে।
বন্ধু প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা পরে বিলছিলেন, “জিতকে ডাক্তারের পোশাকে দেখে মনে হচ্ছিল কোনও ফিল্মের সেটে এসেছি।”
কিন্তু হঠাৎ ডাক্তারের পোশাকে?
তার কারণ নিজের আই ফোন নিয়ে ডাক্তারদের সঙ্গে অপারেশন থিয়েটারে ছিলেন জিৎ। “আমি অপারেশন থিয়েটারের ভিতরে ঢুকে পুরোটা রেকর্ড করেছি। এটা আমার জীবনের এমন এক মুহূতর্, যা কোনও দিন ভুলব না। আমি এখনও নাম্ব, জানেন! বুঝতে পারছি একটা বিরাট পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে জীবনে,” ডাক্তারের পোশাক ছাড়তে ছাড়তে বলছিলেন জিৎ।
জিৎ শুধু রেকর্ড করেছেন তাই নয়, অনেক ছবিও তুলেছেন। অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে সেই ছবিগুলো দেখে একা একাই হাসছিলেন তিনি। |
আগে |
|
অপারেশন থিয়েটারে স্ত্রী মোহনার পাশে থাকার জন্য ডাক্তারের
পোশাকে নায়ক। করলেন সার্জারির রেকর্ডিংও |
|
ছেলে হলে বলত জুনিয়র জিৎ, এখন ঘরে লক্ষ্মী |
অপারেশন থিয়েটার থেকে এ বার সবাই পৌঁছল ভাগীরথী নেওটিয়া হসপিটালের ৫১১ নম্বর ঘরের অ্যান্টি-রুমে। জিতের স্ত্রী মোহনা তখন পাশের ঘরে ঘুমাচ্ছেন। আছে জিতের দুই ভাই কিশোর আর গোপাল। সঙ্গে জিতের বৌদি আর মা।
অনবরত বেজে চলেছে ব্ল্যাকবেরি আর আই ফোন। আসছে প্রচুর এসএমএস। ফেসবুক, ট্যুইটারে জিতের টাইমলাইনে শুধুই কনগ্র্যাচুলেশন।
তার মধ্যেই জিৎ বললেন, “ছেলে হলে সবাই বলত জুনিয়র জিৎ। এখন সবাই বলছে বাড়িতে লক্ষ্মী এল।”
ততক্ষণে জিতের প্রিয় নলেন গুড়ের সন্দেশ খাওয়ানো হচ্ছে সবাইকে। এর মাঝেই জিৎ পড়ে শোনালেন কাল রাতে তাঁর নিজের একটা লেখা। লেখার বিষয় বাবা হওয়ার আগের দিনের অভিজ্ঞতা।
আরও লেখেন না কেন?
“খুব ইচ্ছে, জানি ভাল লিখব, কিন্তু সময় পাই না একদম।” বলতে বলতে ডাক আসে নার্সারি থেকে। “একবার মেয়েকে দেখে যান।”
|
নার্সরা জিতকে দেখতে ব্যস্ত, আমরা মেয়েকে |
বাড়ির লোকেরা সবাই মিলে নার্সারিতে গেলেন মাদনানি পরিবারের নতুন সদস্যকে দেখতে। পর্দা সরানোর সঙ্গে সঙ্গে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ছবি তুলতে। অন্য দিকে নার্সরা ব্যস্ত তাঁদের প্রিয় হিরোকে দেখতে।
তখন জিতের বাড়ির লোকেরাও জিতকে নিয়ে মশকরা করছে। জিতের বৌদি বললেন, “নার্সরা জিতকে দেখতে ব্যস্ত, আমরা মেয়েকে।”
কিন্তু নাম কী রাখছেন মেয়ের?
“দু-একটা নাম মাথায় আছে। সবার সঙ্গে কথা বলে ফাইনালাইজ করব,” জানালেন গর্বিত পিতা।
|
পরে |
|
|
নাতনির কথা বলতে বলতে গর্বিত ঠাকুমা |
স্বস্তির হাসি। অপারেশন সাকসেসফুল |
|
আমার হিরোইনরা কিন্তু সবাই উইশ করে দিয়েছে |
পাঁচ তলার ঘরে এর মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে চুটিয়ে আড্ডা। এর মঝেই জিতের মা বলছেন, নাতনির মাথায় কত চুল! জিতের সর্বক্ষণের সঙ্গী কৃষ্ণা বলছেন, “আমাকে তো স্টুডিও থেকে ফোন করেছে অনেকে। বলছে আজ রাতেই পার্টি চাই।”
জিৎও মিটমিট করে সব শুনছেন। বলছেন অল্প। এর মধ্যেই জানালেন, তাঁর হিরোইনরা তাঁকে মেসেজ করে দিয়েছেন। “আমার হিরোইনরা খবরটা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই কনগ্র্যাচুলেট করেছে।”
কোন কোন হিরোইন মেসেজ করল?
“এই তো প্রিয়াঙ্কা, স্বস্তিকা, কোয়েল, শ্রাবন্তী, সায়ন্তিকা সবাই মেসেজ করেছে,” বলছিলেন ‘আওয়ারা’।
|
নাম দিলেন ওঁরা |
ঋতুপর্ণা |
শ্রাবন্তী |
কোয়েল |
মিনিষা/প্রতীক্ষা |
আরাধনা |
জয়িতা |
|
বাবা যে আজও ‘দিওয়ানা’ |
আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে শুরু কাজে যাবার তোড়জোড়। আজও শ্যুটিংয়ে যাবেন?
“গতকালও শ্যুটিং করেছি। আজকেও শ্যুটিং। আজ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সিনও করতে হবে। জানুয়ারিতেই রিলিজ ছবিটার,” বললেন তিনি।
এর মধ্যেই জিনস্ আর শার্ট পরে নিয়েছেন নায়ক।
গন্তব্য এনটি ওয়ান স্টুডিও।
বাবা হয়েছেন তো কী!
বাবা যে আজও কাজ পাগল ‘দিওয়ানা’!
|
ছবি: ইন্দ্রনীল রায় |
|