|
|
|
|
কলেজ শিক্ষক ধর্মঘটে ঝাড়খণ্ডে বন্ধ ক্লাস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
সরকারি বেতন কাঠামোর দাবিতে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের আন্দোলনে ঝাড়খণ্ডের ৫২ টি কলেজের পঠন-পাঠন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন ওই সব কলেজের প্রায় আড়াই লক্ষ ছাত্রছাত্রী। এমনকী ধর্মঘটের ফলে বন্ধ হয়ে রয়েছে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার ফর্ম পূরণও। অনিশ্চয়তার মুখে পরীক্ষার্থীরা। অবিলম্বে ক্লাস চালু করার দাবিতে কোথাও কোথাও ছাত্রছাত্রীরা সংগঠন তৈরি করে হাতে গোলাপ নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সামনে হাজির হচ্ছেন। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ ভেবে অধ্যাপকদের ধর্মঘট তুলে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী বৈদ্যনাথ রাম। দাবি বিবেচনার আশ্বাসও তিনি দিয়েছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের অভিযোগ, বিহার থেকে ঝাড়খণ্ড আলাদা হওয়ার আগে, অনেক জায়গাতেই বেসরকারি উদ্যোগে কলেজ তৈরি হয়েছিল। কলেজগুলিকে অবিভক্ত বিহার সরকারই অনুমোদন দিয়েছিল। তৎকালীন বিহার সরকার সেই সব কলেজের বেশ কয়েকটি অধিগ্রহণও করে। এই ৫২ টি কলেজ অধিগৃহিত হওয়ার আগেই বিহার ভাগ হয়ে পৃথক ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠিত হয়। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ঝাড়খণ্ড সরকার একটি কলেজকেও অধিগ্রহণ করেনি। |
|
ক্লাসে ফিরে আসুন। ধর্মঘটী শিক্ষকদের ফুল দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ।
বুধবার ধানবাদের এক কলেজে চন্দন পালের তোলা ছবি। |
আন্দোলনকারীদের সংগঠন, অ্যাফিলিয়েশন ডিগ্রি কলেজ অ্যাসোসিয়েশন-এর সভাপতি অধ্যাপক নরেন্দ্রকুমার সিংহ জানান, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দু’টি কলেজের দু’ধরনের নিয়ম। বিহার সরকারের অধিগ্রহণ করা কলেজগুলিকে ঝাড়খন্ড সরকার বেতন দেয় সরকারি বেতন কাঠামো মেনেই। কিন্তু তাঁদের কলেজগুলিকে বছরে কুড়ি-পঁচিশ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া ছাড়া আর কোনও সরকারি সুবিধা দেওয়া হয় না। বাকি কাজের জন্য ছাত্রছাত্রীদের টিউশন ফিজ্-ই ভরসা।
কলেজে সরকারি বেতন কাঠামো চালুর দাবিতে গত ২৩ নভেম্বর থেকে ওই সব কলেজে ক্লাস নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন শিক্ষকরা। পরে অশিক্ষক কর্মীরাও আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় অন্যান্য কাজকর্ম বন্ধ। রাঁচির সঞ্জয় গাঁধী কলেজের অর্থনীতির শিক্ষক নগেন্দ্র প্রসাদ বলেন, “কলেজ সার্ভিস কমিশন পাশ করেও আমরা এই ব্যবস্থার কারণে অত্যন্ত অল্প বেতন পাই। অথচ সরকারি কলেজের তুলনায় আমাদের মতো কলেজগুলিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি।” বুধবার শিক্ষামন্ত্রী বৈদ্যনাথ রাম বলেন, “বিষয়টি সরকারিস্তরে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। গ্রেডেশন পদ্ধতির মাধ্যমে ওই কলেজগুলিকে সরকারি বেতনক্রম দেওয়া যায় কিনা তা নিয়েও ভাবনা-চিন্তা চলছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটিও গড়া হয়েছে। তাদের রিপোর্টের জন্য সরকার অপেক্ষা করছে।” সরকারের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের এই টানাপোড়েনের জেরে নাজেহাল হচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। তাদের সংগঠন যুব ছাত্র জাগরণ মঞ্চের সদস্যরা জানান, সামনেই পরীক্ষা। অথচ ক্লাস বন্ধ। ইন্টারমিডিয়েটের ফর্ম জমার কাজও বন্ধ। ধানবাদের বিএসএস কলেজের ছাত্রী নিশা কুমারী বলেন, “আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে তো জবরদস্তি করতে পারি না। কিন্তু আমাদেরও তো ভবিষ্যৎ ভাবতে হবে। তাই আমরা গোলাপ ফুল হাতে দিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে গিয়ে ক্লাস চালু করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।” শিক্ষকরা অবশ্য এখনও সেই অনুরোধে সাড়া দেননি। |
|
|
|
|
|