দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
নাকাল বেহালা
হুলের সুর
দিনভর মশার উপদ্রব লেগেই রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেহালার বিভিন্ন এলাকায় এখনও রয়ে গিয়েছে খোলা নর্দমা। আর এই সব নর্দমাই মশার আঁতুড়। শুধু মশাই নয়, এই খোলা নর্দমার জন্য সারা বছর বিভিন্ন ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই সব নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কারও হয় না বলে বাসিন্দারা জানান।
কলকাতা পুরসভার ১৩ এবং ১৪ নম্বর বরোর অন্তর্গত বেহালার বিভিন্ন এলাকা। এই সব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষায় বৃষ্টির জমা জল এবং খোলা নর্দমার জল মিলেমিশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। সেই দূষিত জল মাড়িয়েই যাতায়াত করতে হয় বাসিন্দাদের। দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে দাঁড়ায়।
১৩ এবং ১৪ নম্বর বরো সূত্রে জানা গিয়েছে, সমগ্র বেহালাকে ভূগর্ভস্থ নর্দমার আওতায় আনতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা এখন পুরসভার হাতে নেই। তবে কয়েকটি এলাকায় ভূগর্ভস্থ নির্মাণের কাজ হয়েছে। বাকি এলাকাগুলিতেও তা করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সেই পরিকল্পনা কবে থেকে কার্যকর হবে তা নিয়ে কোনও ইঙ্গিত দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট এই দুই বরোর কর্তৃপক্ষ।
এলাকার সমীর আইচের কথায়: “এই সব খোলা নর্দমার জন্য আমাদের অপরিসীম কষ্ট সহ্য করতে হয়। মশার উপদ্রব সারা দিন রয়েছে। এক এক সময়ে তীব্র দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন মহলে জানিয়েও এই সমস্যার সুরাহা হয়নি। তবে হয়ে যাবে বলে আমরা অনেক বার প্রতিশ্রুতি পেয়েছি।” ১৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুশান্ত ঘোষের কথায়: “কিছু এলাকায় কাজ হয়েছে। বাকি কাজটাও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের টাকায় হবে। প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে।” ১৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান মানিক চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, “খোলা নর্দমাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার হয়। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের টাকায় দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে গেলে বেহালায় আর খোলা নর্দমা থাকবে না।”
বরোর কর্তাব্যক্তিরা কাজ হওয়ার দাবি করলেও এলাকায় ঘুরে কিন্তু দেখা গিয়েছে ভিন্ন ছবি। যেমন, হরিদেবপুর, কবরডাঙা, সরশুনা, ঠাকুরপুকুর, সাউথ বেহালা রোড এবং জেমস লং সরণি সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেল, আবর্জনা আর প্লাস্টিকে রুব্ধ হয়ে রয়েছে বেশির ভাগ নর্দমা। এই সব নর্দমার জল সরে না। ভাসছে মশার লার্ভা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্গন্ধে তাঁরা টিকতে পারছেন না। পোকামাকড়ের উপদ্রবও লেগেই আছে।
বেহালা এলাকার অন্তর্গত ১১৫, ১২২, ১২৩, ১২৪, ১২৫, ১২৬ এবং ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সর্বত্র খোলা নর্দমা এখনও রয়ে গিয়েছে। এই সব ওয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থা এখনও খোলা নর্দমার উপরেই নির্ভরশীল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সমস্যার কথা বললেই কাজ শুরু হওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। অথচ বাস্তবে কিছুই হয় না।
বেহালার বাসিন্দা এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “বেহালার ৫০ শতাংশ এলাকায় কেইআইপি প্রকল্পের কাজ হয়ে গিয়েছে। আর ৫০ শতাংশ এলাকায় বাকি রয়েছে।”

ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.