|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
বেলেঘাটা খাল |
দখলনামা |
কাজল গুপ্ত |
জলপ্রবাহ নেই। কচুরিপানা, প্লাস্টিকে ভরা। দু’পাড়ে ব্যবসা, ঝুপড়ি, পার্কিং থেকে রাজনৈতিক দলের অফিস সবই রয়েছে। অভিযোগ, সৌন্দর্যায়নের প্রতিশ্রুতি শুধু কাগজেকলমেই রয়ে গিয়েছে। ফলে বছরভর মশার উৎপাত আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বেলেঘাট খাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। যদিও সেচ দফতরের দাবি, দ্রুত এই খালের সংস্কার এবং সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। |
|
বেলেঘাটা খাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন খালের সংস্কার হয় না। প্রশাসন নির্বিকার। বাম আমলে খালের দু’পাড় কাঁটা তার দিয়ে ঘেরা হলেও এখন ফের দখলদারি শুরু হয়ে গিয়েছে। গজনবি কাট থেকে বেলেঘাটা খালের জলপ্রবাহ দীর্ঘ দিন বন্ধ। গজনবি কাট থেকে মানিকতলা ব্রিজ পর্যন্ত অংশে খালের পাড়ে লরি পার্কিং শুরু হয়েছে, গজিয়ে উঠেছে ঝুপড়িও। মানিকতলা ব্রিজ থেকে ইএম বাইপাস পর্যন্ত বেলেঘাটা খালের দু’পাড় জুড়ে কাঠ চেরাই, খাবারের দোকান, গাড়ি মেরামতি থেকে প্লাস্টিক রকমারি ব্যবসা চলে। অভিযোগ উঠেছে, এই অংশে শাসক দলের একাধিক কার্যালয়ও গজিয়ে উঠেছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যা হলেই মশার উৎপাত শুরু হয়ে যায়। বেলেঘাটার বাসিন্দা দেবাশিস বসু বলেন, ‘‘খালপাড়ে আবার দখলদারি শুরু হয়ে গিয়েছে। জল নেই। কয়েকটি জায়গায় শুধু বর্ষার জল জমে রয়েছে। মশাবাহিত রোগও হচ্ছে। কোনও প্রতিকারও নেই।’’ উল্টোডাঙাবাসী সনাতন সরকারের কথায়: ‘‘আর জি কর হাসপাতালের ক্রসিং থেকে খালের দু’পাড়ে ঝুপড়ি উচ্ছেদ করে রাস্তা মেরামত হল। সেখানে এখন লরি পার্ক করা থাকে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।” |
|
৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সিপিএমের রাজীব বিশ্বাস বলেন, ‘‘সেচ দফতর, কলকাতা পুরসভাকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। এক সময় তৃণমূলের মদতে ‘খাল বাঁচাও কমিটি’ তৈরি হয়েছিল। তাঁরা এখন কোথায়? খাল পাড়ে গাছ কেটে শাসক দলের একাধিক পার্টি অফিস তৈরি হয়েছে। খালটি এখন মশার আঁতুড়। আবার সংস্কারের দাবি জানাব।”
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘এই মরসুমে পুর এলাকার বিভিন্ন খালে হাতে টানা নৌকা চালিয়ে এবং মশার তেল ছড়িয়ে সমস্যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছি। ইতিমধ্যে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কয়েকটি খালে সমস্যা আছে। যেমন, বেলেঘাটা খাল। সেচ দফতরের সঙ্গে কথাও হয়েছে। তাঁরা সংস্কারের কাজ করবেন। সরেজমিন খতিয়ে দেখে প্রাথমিক প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেব।’’ |
|
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল বলেন, “দলের অনুমোদিত কোনও পার্টি অফিস খালপাড়ে নেই। কেউ করলে তা তাঁদের দায়িত্ব। প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু খালপাড় জুড়ে রকমারি ব্যবসার নামে যে দখলদারি শুরু হয়েছে, তা বন্ধ করতে না পারলে মুখ্যমন্ত্রীর সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা সফল হবে না।”
সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়: “শুধু বেলেঘাটা খালই নয়, একাধিক খালে এ ধরনের সমস্যা রয়েছে। খাল সংস্কারের জন্য ১১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে। খালপাড় দখলমুক্ত করা হবে। খালে জলপ্রবাহের বিষয়ে আলোচনা চলছে।”
|
ছবি: শৌভিক দে |
|
|
|
|
|