|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
অমিল অটো-বাস |
ভোগান্তির সফর |
দেবাশিস দাস |
শেষ হয়েও হচ্ছে না শেষ!
‘কলকাতার গতির ডানা’য় ভর করে দীর্ঘ পাতাল-পথ লহমায় পেরিয়ে এসেও শেষ হচ্ছে না দুর্ভোগের।
গড়িয়া পর্যন্ত মেট্রোর সম্প্রসারণ হয়েছে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি কামালগাজি, সোনারপুর, রাজপুর, হরহরিতলা ও বারুইপুরের বাসিন্দাদের। গড়িয়া পর্যন্ত মেট্রো হওয়ার পরে তাঁরা ভেবেছিলেন, যাতায়াতের সমস্যার কিছুটা সুরাহা হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। কারণ, মেট্রোয় তাড়াতাড়ি গড়িয়া পৌঁছনো গেলেও সন্ধ্যার পরে কামালগাজি, সোনারপুর, রাজপুর, হরহরিতলা ও বারুইপুরে যাওয়ার গাড়ি পেতে কালঘাম ছুটে যায় নিত্যযাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, কাজের জায়গা থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে রোজই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মেট্রোয় কবি নজরুল স্টেশনে নেমে বাস বা অটোর জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। তবে, রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, এই সমস্যার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। |
|
নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য: সন্ধ্যার পরে কবি নজরুল স্টেশন থেকে সব চেয়ে কাছে কামালগাজির মোড়ে যাওয়ার গাড়ি পেতেই খুব কষ্ট করতে হয়। আরও দূরে যাওয়ার জন্য তো কম করে দেড় থেকে পৌনে দু’ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। বারুইপুর থেকে নিয়মিত ওই পথেই কলকাতায় যাতায়াত করেন সুরেশ মিত্র। তাঁর কথায়: “মেট্রো থেকে নেমে বাস বা অটোর জন্য অপেক্ষা করতে হলে বাড়ি ফেরাটাই অনিশ্চিত হয়ে যাবে। বাস পাওয়া যায় প্রায় দেড় ঘণ্টা অন্তর। তাতেও প্রচণ্ড ভিড় হয়। অটোর অবস্থাও একই। তাই একটা অটোর বদলে তিনটে অটো পাল্টে বাড়ি ফিরি।”
নিত্যযাত্রী ও স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ, সন্ধ্যার পর থেকে এক শ্রেণির অটোচালকও টালবাহানা শুরু করেন। অনেক অটো দাঁড়িয়ে থাকলেও যেতে চায় না। তা ছাড়া, নির্দিষ্ট রুটে এক বারে অটো যেতে চায় না। বার বার পাল্টাতে হয়। এমনিতেই ওই রুটে গুটিকয়েক বাস চলে। সন্ধ্যার পর থেকে সেই সংখ্যা আরও কমে যায়।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার উপ-পুরপ্রধান এবং সোনারপুর (উত্তর) বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলের ফিরদৌসী বেগম অবশ্য দাবি করেন, “এই ধরনের সমস্যার কথা আমার জানা নেই। আমি জানি, গড়িয়া মোড়ে কবি নজরুল মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় সব ঠিকই আছে। সন্ধ্যার পরে প্রচুর অটো-বাস থাকে। কোনও অসুবিধা হয় না।” |
|
তবে নিত্যযাত্রীদের সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার প্রাক্তন উপপুরপ্রধান এবং পুরসভার বিরোধী দলের সদস্য সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘এই এলাকার বাসিন্দাদের সন্ধ্যার পরে যাতায়াত করতে খুব অসুবিধা হয়। এলাকার বিভিন্ন রাস্তার অনেক অংশে অন্ধকার থাকে। কমে যায় বাস এবং অটো। মেট্রো থেকে নেমে গাড়ি পাওয়াটাও খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।”
অধিকাংশ বাসিন্দার বক্তব্য: মেট্রোয় কম সময়ে গড়িয়া পৌঁছেও যানবাহনের অভাবের জন্য মেট্রোর সুফল তাঁরা ভোগ করতে পারেন না। যাতায়াতের পুরো বিষয়টি অটো এবং বাসের খামখেয়ালিপনার উপরে দাঁড়িয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে সমস্যার কথা অনেক বার জানিয়েও লাভ হয়নি। এ বিষয়ে বারুইপুর পশ্চিমের বিধায়ক ও বিধানসভার অধ্যক্ষ তৃণমূলের বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “এই সমস্যা নিয়ে আমার সঙ্গে পরিবহণ সচিবের কথা হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই একটা সুরাহা হবে।” গোটা সমস্যা সম্পর্কে অবহিত আছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রও। তাঁর কথায়: গড়িয়া-বারুইপুর রুটের এই সমস্যা দীর্ঘ দিনের। আমরা সমস্যার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছি। অনেক রুটে সুরাহাও হয়েছে। ৩৪ বছরের সমস্যার এত তাড়াতাড়ি সমাধান করা যায় না। তবে চেষ্টা চলছে।”
|
ছবি: সুব্রত রায় |
|
|
|
|
|