দক্ষিণ কলকাতা |
রবীন্দ্র সরোবর |
রইল আড়ালে |
কৌশিক ঘোষ |
রাস্তার মালিকানা নিয়ে জটিলতার সমাধান হল না। রাস্তার জবরদখলকারীদের সরানো নিয়ে স্থায়ী সিদ্ধান্ত এখনও অধরাই। দক্ষিণ কলকাতায় রবীন্দ্র সরোবরের সামনে নতুন করে গড়ে ওঠা ঝুপড়ি ভাঁজ ফেলেছে প্রশাসনের কপালে। রবীন্দ্র সরোবরের সৌন্দর্যায়নের স্বার্থেই এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত আলোচনায় বসতে চায় কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) এবং রাজ্য পূর্ত দফতর। |
|
কেএমডিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার বিবেক ভরদ্বাজ বলেন, “রবীন্দ্র সরোবরে ঢোকার মুখের রাস্তায় ঝুপড়িবাসীরা বসার ফলে এখানকার সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু এই রাস্তাটি পূর্ত দফতরের। যত ক্ষণ না এই রাস্তা কেএমডিএ-কে হস্তান্তর করা হচ্ছে তত ক্ষণ জবরদখলকারীদের সরানোর ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। এই রাস্তা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে পূর্ত দফতরকে জানিয়েছি।”
পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “রবীন্দ্র সরোবর কলকাতা উন্নয়ন সংস্থার (কেআইটি) অধীনে হলেও লেকগার্ডেন্স উড়ালপুলের সামনেই সরোবরের প্রবেশপথের রাস্তা আমাদেরই। এই রাস্তা এখনও সংশ্লিষ্ট দফতরকে হস্তান্তর করা হয়নি। এই নিয়ে আলোচনা চলছে। তার পরেই ঝুপড়িবাসীদের সরানোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।” |
|
লেকগার্ডেন্স রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে তিন নম্বর রেল গেট পেরোলেই যে রাস্তা পড়ে তা দিয়ে সরাসরি ঢোকা যায় রবীন্দ্র সরোবরের দু’দিকের দু’টি উদ্যানেই। এই রাস্তার দু’দিকের ফুটপাথ বরাবর গজিয়ে উঠেছে ঝুপড়ি এবং খাবারের দোকান। রবীন্দ্র সরোবরের নতুন রং করা রেলিংয়ের একপাশে ডাঁই করে রাখা থাকছে আবর্জনা। ফলে, রবীন্দ্র সরোবরের খোলনলচে পাল্টালেও এই অংশের গেটের মুখে এই ধরনের অবস্থা থাকায় সৌন্দর্যায়নের ক্ষেত্রে ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। কেআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সরোবরে প্রবেশের জন্য অনেকগুলি গেট আছে। তিন নম্বর রেলগেটের কাছের গেটটি এর অন্যতম।
মূলত এখানেই তৈরি হয়েছে সমস্যা। অনেকে কেআইটি-র কাছে এ বিষয়ে অভিযোগও করেছেন।
এই রাস্তার ক্ষেত্রে জটিলতা কোথায়? |
|
কেআইটি-র এক আধিকারিক জানান, রবীন্দ্র সরোবর ও তার আশপাশের কয়েকটি রাস্তা কেএমডিএ-র অধীনস্থ কেআইটি-র হলেও এই নির্দিষ্ট রাস্তার ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম রয়েছে। এই রাস্তাটিও কেআইটি-রই ছিল। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি লেক গার্ডেন্স উড়ালপুল নির্মাণের সময়ে রাজ্য পূর্ত দফতর এই রাস্তাটি কেআইটি-র কাছ থেকে অধিগ্রহণ করে। তার পর থেকে তারাই রাস্তাটি রক্ষণাবেক্ষণ করে। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষকে তাঁরা রাস্তাটি ফের হস্তান্তর করেনি। সম্প্রতি এই রাস্তায় ঝুপড়িবাসীরা বসার পরেই প্রশাসনের টনক নড়ে। প্রাথমিক ভাবে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, রাস্তাটি পরিষ্কার রাখতে পূর্ত দফতরকেই নির্দেশ দেওয়া হবে। পরে তা-ও বাস্তবায়িত হয়নি। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে দুই দফতরের মধ্যে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
|
—নিজস্ব চিত্র |
|