উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর
বি টি রোড
সড়ক ভয়ঙ্কর
ব্যারাকপুর কমিশনারেট হওয়ার পরে বরাহনগর থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত বিটি রোডে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বেড়েছে। ডিভাইডার হয়েছে। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, বিটি রোডে দুর্ঘটনার সংখ্যার বিশেষ হেরফের হয়নি। পথচারী, মোটরসাইকেল, গাড়ির আরোহীদের পাশাপাশি পুলিশকর্মীরাও দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন। কারণ, অন্ধকারে কোথায় ডিভাইডার শুরু হচ্ছে বোঝাই যাচ্ছে না।
দুর্ঘটনা এড়াতেই বিটি রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তায় ডিভাইডার বসানো হয়েছিল। বসেছিল মার্কারি ভেপার ল্যাম্প। ডিভাইডারের কিছু অংশে লোহার রেলিং লাগানো হয়েছিল। বাকি অংশে বসেছিল বাহারি গাছ। কিন্তু অভিযোগ, ডিভাইডারে রিফ্লেক্টর বসানো হয়নি। ফলে ডিভাইডার কোথায় শুরু আর কোথায় বা শেষ, রাতে তা বুঝতে পারেন না অধিকাংশ চালক। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
বিভিন্ন কারণে, বিটি রোডের কয়েকটি জায়গায় ডিভাইডার নেই। অভিযোগ, চালকদের একাংশ এই সব জায়গায় গতি বাড়ান। মাঝেমধ্যে ওভারটেক করতে গিয়ে হঠাৎ ডিভাইডার শুরু হয়ে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারালেই ঘটে দুর্ঘটনা। মাস তিনেক আগে সোদপুরের কাছে এ ভাবেই ধাক্কা মেরে উল্টে যায় মালবোঝাই একটি ট্রাক। শুধু রাতেই নয়, দিনের বেলাও সমস্যা হয়।
অভিযোগ, এই রাস্তায় অনেকগুলি ভেপার ল্যাম্প জ্বলে না। কয়েকটি জায়গায় ল্যাম্পের খুঁটি বিপজ্জনক ভাবে রাস্তার দিকে হেলে পড়েছে। যেমন, খড়দহ থানা এলাকার সুখচরের কাছে বিটি রোডের একটি বড় অংশে ডিভাইডার নেই। যেখান থেকে ডিভাইডার শুরু হয়েছে, সেখানে আলোর খুঁটি অনেক দিন আগেই উপড়ে গিয়েছে। কাছাকাছি খুঁটিগুলিতেও আলো জ্বলে না। পরিসংখ্যান বলেছে, গত ছ’মাসে এখানেই ১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বিটি রোডের নানা চৌমাথায় আলো খারাপ হয়ে গিয়েছে। চালকদের একাংশের অভিযোগ, অন্ধকারে এই সব চৌমাথায় কর্মরত সিভিক পুলিশ বা সাধারণ পুলিশকর্মীদের ঠিকমতো দেখা যায় না। নির্দেশ তো বোঝাই যায় না। ফলে হঠাৎ এঁরা গাড়ির সামনে চলে আসেন। ব্রেক কষতে দেরি হলেই দুর্ঘটনা ঘটে। কয়েক বার এ ভাবে পুলিশ কর্মীরাও আহত হয়েছেন।
বিটি রোডের নীচ দিয়ে বিদ্যুৎ, নিকাশি, পানীয় জল, টেলিফোনের লাইন গিয়েছে। নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে রাস্তা খুঁড়তে হয়। তার পরে কোনওক্রমে জোড়াতালি দেওয়া হয়। অভিযোগ, এ ধরনের জোড়াতালি বেশি দিন টেকে না। নানা জায়গায় গর্ত হয়ে যায়। এখানেও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন এই বিষয় নিয়ে মন্তব্য করাই মুশকিল। খুব তাড়াতাড়ি রিফ্লেক্টর লাগানো হবে।’’ এত দিন কেন হয়নি? এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর অবশ্য পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে, ব্যারাকপুরের মহকুমাশসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘এটি একটি বড় সমস্যা। ট্রাফিককেই দায়িত্ব নিতে হবে। আগামী প্রশাসনিক বৈঠকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’’
এই ব্যাপারে পূর্ত দফতরের নর্থ সাবার্বন ডিভিশনের চিফ এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সিদ্ধার্থ মণ্ডল বলেন, “ট্রাফিক পুলিশের প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা রাস্তায় ডিভাইডার তৈরি করি। কমিশনারেট তৈরির পরে বি টি রোডে যদি ডিভাইডারের সম্প্রসারণ বা সঙ্কোচনের প্রয়োজন হয় তা বিভাগীয় পুলিশকর্তারা আমাদের জানালে অবশ্যই বিবেচনা করে দেখব।”

ছবি: অলকেশ মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.