উত্তর কলকাতা
আটকে ছাউনি
জবরদখলের জটে
ছাড়পত্র হয়ে গিয়েছে। হয়ে গিয়েছে অর্থ বরাদ্দও। কিন্তু ফুটপাথে জবরদখল থাকায় শুরু হচ্ছে না বাসছাউনির নির্মাণকাজ। এই অবস্থা উত্তর কলকাতার মহাজাতি সদনের উল্টো দিকের ফুটপাথের। অভিযোগ উঠেছে, বাসছাউনি তৈরিতে বাধা দিয়েছিলেন স্থানীয় কিছু ফল ব্যবসায়ী। কারণ, এখানে তাঁদের মালপত্র ওঠানো-নামানোর কাজ চলে। তার পরেই পিছু হটেন পুরকর্তৃপক্ষ।
কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেব। কোনও ওয়ার্ডে কোনও প্রকল্প নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় কাউন্সিলরই জায়গা চিহ্নিত করে দেন। প্রয়োজনে সমস্যা সমাধানে স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলব।”
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত কোনও একটি জায়গায় সাংসদ তহবিলের অর্থে একটি বাসছাউনি নির্মাণের প্রস্তাব এসেছিল। ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর রীতা চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এর পরে কোন জায়গায় এই বাসছাউনি তৈরি হবে তা নিয়ে সমীক্ষা শুরু হয়।
পুরসভা সূত্রে খবর, উত্তর ও মধ্য কলকাতার ৬০টি ওয়ার্ডে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় যাত্রীদের সুবিধার জন্য একটি করে বাসছাউনি তৈরির জন্য সাংসদ তহবিল থেকে মোট ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। প্রতিটি বাসছাউনি দৈর্ঘ্য নয় ফুটের বেশি হবে না। প্রস্থে ৬ মিটারের বেশি হবে না। নকশাও হয়ে গিয়েছে। ওয়ার্ডগুলি সংশ্লিষ্ট বরো থেকে অর্থ পাবে। ৪১ নম্বর ওয়ার্ড পাঁচ নম্বর বরোর মধ্যে পড়ে।
সংশ্লিষ্ট বাসছাউনি নিয়ে সমস্যা কোথায়?
রীতাদেবী জানান, যেখানে-সেখানে বাসছাউনি করা যায় না। মূল রাস্তার পাশেই করতে হবে। তাই চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপরে মহাজাতি সদনের উল্টো দিকের জায়গাটি বেছে নেওয়া হয়। পুরসভার সমীক্ষায় দেখা যায়, মহাজাতি সদন ‘হেরিটেজ’ তালিকায় থাকায় তার সামনে কোনও নির্মাণ কাজ করা যাবে না। মহাজাতি সদনের বিপরীতে বালমুকুন্দ মক্কর রোড। এই রাস্তার মুখ থেকে ফলপট্টি শুরু হচ্ছে। এর পাশেই রয়েছে মেট্রো রেলওয়ের কুলিং সেন্টার। সেখানে নির্মাণ করা সম্ভব নয়। তাই বিকল্প না থাকায় বালমুকুন্দ মক্কর রোড ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের মোড়ে ফুটপাথের উপরে এই বাসছাউনি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ফ্রুট মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহম্মদ সোরাব বললেন, “সমস্যা আছে। কিন্তু বিকল্প জায়গা না থাকায় ওখানেই ফল ওঠানো-নামানোর কাজ চলে। বাসছাউনি হলে সমস্যা হবে। ফল ওঠানো-নামানোর বিকল্প ব্যবস্থার জন্য সরকারকে জানিয়েছি।” যদিও রীতাদেবী বলেন, “এখনই বিকল্প ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। খুঁজতে হবে। সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে আলোচনা হবে।”
পাঁচ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন তৃণমূলের অপরাজিতা দাশগুপ্ত বলেন, “যেখানে বাসছাউনি তৈরি হবে সেখানেই বেচাকেনা চলছে। আমি নিজেও ঘুরে দেখেছি। কাউন্সিলরকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।”

—নিজস্ব চিত্র




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.