বাস, ম্যাক্সি, ট্রেকার, অটো থেকে শুরু করে যন্ত্রচালিত ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকে সড়ক দখল করে। ওই যানবাহনের অধিকাংশই যাত্রী ওঠানো নামানো চালায় সড়কের উপর দাঁড়িয়েই। ফলে সড়কের অর্ধেক দখল হয়ে থাকে ও ভাবেই। সঙ্কুচিত ওই সড়ক দিয়ে অবিরত যাতায়াত করছে রিক্সা, সাইকেল, মোটরসাইকেল থেকে শুরু করে ছোট গাড়ি। আর সেই সড়কে যাতায়াত করতে গিয়ে হোঁচট খেতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনাও। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত এ ভাবেই লাগামছাড়া যানজটে জেরবার চাঁচল মহকুমা সদর। দিনের পর দিন যানজটে জেরবার হয়ে বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস উঠলেও সমস্যা মেটাতে পুলিশ-প্রশাসন উদ্যোগী নয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাংলো থেকে দফতর পর্য়ন্ত ওই পথে যাতায়াত করতে গিয়ে যানজটে হামেশাই নাকাল হতে হয় চাঁচলের মহকুমাশাসককে। সমস্যার কথা অজানা নয় মহকুমাশাসকেরও। বিরক্ত মহকুমাশাসক পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত বলেছেন, চাঁচলে যানজট ভয়ঙ্কর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলা হলেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। এ ভাবে চলতে পারে না। ফের পুলিশকে বলব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।
চাঁচের আইসি জয়ন্ত লোধচৌধুরি সমস্যার কথা মেনে নিলেও পর্য়াপ্ত ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “পর্যাপ্ত পুলিশ কর্মী নেই। তবুও সড়ক দখল করে থাকা যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ অভিযান চালাবে।”
পুলিশ, প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁচলে লাগামহীন যানজটের শিকড় লুকিয়ে রয়েছে অন্যত্র। ২০০১ সালে মহকুমা সদর হয়েছে চাঁচল। এক দশকে যানবাহনের সংখ্যা ১০ গুনের বেশি বাড়লেও বাসস্ট্যান্ডের পরিকাঠামোর উন্নতি হয়নি। যে বাসস্ট্যান্ড রয়েছে তাতে হাতে গোনা কয়েকটি যানবাহনও সঠিক ভাবে দাঁড়াতে পারে না। ফলে যানবাহনের ভরসা সেই সড়ক।
অথচ হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া ও চাঁচলের ৬টি ব্লকের কেন্দ্রস্থল চাঁচলে প্রতিদিন নিভিন্ন এলাকা থেকে নানা কাজে অসংখ্য মানুষকে চাঁচলে আসতে হয়। এ ছাড়া স্কুল, কলেজের পড়ুয়ারা তো রয়েছেই। যানবাহন অবৈধ ভাবে সড়ক দখল করে দাঁড়িয়ে থাকায় সকাল থেকেই শুরু হয় যানজট। চাঁচলের প্রাণকেন্দ্র নেতাজি মোড় থেকে সবকটি রাস্তাই যানজটে আটকে যায়। রাস্তা দখল করে থাকা অটো, যন্ত্রচালিত ভ্যান ও রিকশার সঙ্গে পথচলতি মানুষের ঠোকাঠুকি ও তার জেরে বচসা বাঁধছে। প্রতিবাদ করলে উল্টে কটূক্তি হজম করতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর দুয়েক আগে সদরের মূল সড়কগুলি দখলমুক্ত রাখতে তৎকালীন প্রশাসন কড়া ব্যাবস্থা নিয়েছিল। কোন রুটের গাড়ি কোথায় দাঁড়াবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পাশাপাশি যন্ত্রচালিত ভ্যান সদরে ঢোকাও নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু নজরদারির অভাবে বর্তমানে তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। চাঁচল ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত ও পরিবহণ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ ইন্দ্রনারায়ণ মজুমদার বলেন, নতুন বাস স্ট্যান্ডের জন্য একটা জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। আর যানজট এড়াতে তো পুলিশকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। |