সন্ধ্যে নামলেই অন্ধকারে ডুবে গিয়ে নিউ কোচবিহার-নিউ জলপাইগুড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস যেন ‘ভুতুড়ে ট্রেন’ হয়ে উঠছে। কারণ, ট্রেনের অধ্কিাংশ কামরায় নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ নিউ কোচবিহার স্টেশন থেকে রওনা হয়ে ফালাকাটা পেরোনোর পরে ট্রেনটির বিভিন্ন কামরায় আলো কমে যাচ্ছে। প্রায়ই ধূপগুড়ি পেরোলেই একাধিক কামরা পুরোপুরি অন্ধকারে ডুবে থাকছে। একরকম ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। মহিলাদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা আরও বেশি। জলপাইগুড়ি রোড কিংবা লাগোয়া এলাকায় অন্য ট্রেনের ক্রসিংয়ের জন্য প্রায় অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকায় ট্রেনটি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তাতে যাত্রীর অনেকে ভয়ে থাকেন। |
কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “একাধিক কামরা নিয়মিত অন্ধকারে ঢুবে থাকার ঘটনা নতুন কিছু নয়। মাঝেমধ্যে পুরো ট্রেনেই আলো থাকছে না। সমস্যা মেটানো হচ্ছে না। এসবের জন্য যাত্রী সংখ্যা কমছে। যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। পাশাপাশি ট্রেনের শৌচাগারের দুর্গন্ধ কামরায় ছড়িয়ে পড়ায় নিত্যযাত্রীরা অতিষ্ঠ। যাত্রীরা জানাচ্ছেন, ট্রেনের কামরা ঠিক মতো সাফাই করা হয় না। শৌচাগারগুলি একেবারে ব্যবহারের অযোগ্য। নাকে রুমাল চেপে থাকতে হয়। জল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা একরকম রুটিন ব্যাপার হয়ে পড়েছে। পানীয় জলের সমস্যাতেও মাঝেমধ্যে যাত্রীদের নাকাল হতে হচ্ছে। ট্রেনের এক নিত্যযাত্রী বলেন, “ট্রেনের রুট বদলে দেওয়া দরকার। এটি সকালে এনজেপি থেকে নিউ কোচবিহার যাচ্ছে। সন্ধ্যের আগে সেটি এনজেপি ফিরছে। যাত্রী টানতে সকালে নিউ কোচবিহার থেকে ছেড়ে ট্রেনটি সন্ধ্যের আগে এনজেপি থেকে চালানো দরকার।” নিউ কোচবিহার স্টেশনের এক আধিকারিক বলেন, “ট্রেনটি কাটিহার ডিভিশন দেখভাল করে। পরিষেবা নিয়ে কিছু বলার নেই।”
রেল সূত্রের খবর, ইন্টারসিটির এনজেপি থেকে সকাল ৯টায় রওনা হয়ে বেলা ১২টা নাগাদ নিউ কোচবিহারে পৌঁছনোর কথা। আবার বিকাল ৪টা ৫০ নিউ কোচবিহার থেকে রওনা হয়ে রাত ৮ টা ১৫ নাগাদ এনজেপিতে পৌঁছনোর কথা। যাত্রীদের অভিযোগ, প্রতিদিন ট্রেনটি কমবেশি আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা দেরি করে। শতাব্দী এক্সপ্রেস নিয়েও এনজেপিতে ক্ষোভ রয়েছে যাত্রীদের। অন্য সব এক্সপ্রেস ট্রেন এবং বহু দিন থেকে চলাচল করা আলিপুরদুয়ার প্যাসেঞ্জার, মালদা প্যাসেঞ্জার, নিউ বঙ্গাইগাঁও প্যাসেঞ্জার ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয় কর্মীদের। এর পরে ওই ট্রেন সঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। নিউ জলপাইগুড়ির এরিয়া ম্যানেজার পার্থ শীল বলেন, “এই সামান্য দূরত্বে ট্রেনে জল, আলো থাকবে না, এটা হতে পারে না। বিষয়টি দেখছি।” |