নিজস্ব সংবাদদাতা • শামুকতলা |
আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকে তুরতুরি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দিনরাত পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ, পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও বহির্বিভাগে দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা চিকিৎসার সুযোগ মিলছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের সমস্যার কথা জানিয়ে লাভ হয়নি। দিনরাত পরিষেবা চালুর দাবিতে আন্দোলনের হুমকি দেয় কংগ্রেস। জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার এ কথা অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন, “তুরতুরি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক সময় শয্যা ছিল। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা সেখানে থেকে পরিষেবা দিতেন। কিন্তু আবাসনের বেহাল দশার জন্য সেটা বন্ধ হয়ে যায়। দ্রুত আবাসন মেরামত করে দিনরাত পরিষেবা চালুর চেষ্টা চলছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১০টি শয্যা ছিল। চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট সেখানে থাকতেন। দিনরাত চিকিৎসার সুযোগ মিলত। ১৯৯৫ সাল থেকে ওই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। এখন একজন চিকিৎসক মাত্র চার ঘণ্টা বহির্বিভাগে থেকে রোগী দেখে চলে যান। নেই ফার্মাসিস্ট। কোনও কারণে চিকিৎসক না এলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের ভরসায় থাকতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। বেলা দুটোর পরে এলাকার কেউ অসুস্থ হলে ২০ কিমি দূরে যশোডাঙ্গা ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হয়। ওই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েন প্রসূতিরা। বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে, স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে আগের মতো দিনরাত পরিষেবা দেওয়ার দাবিতে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তাদের স্মারকলিপি দিয়ে লাভ হয়নি। সিপিএমের আলিপুরদুয়ার-২ জোনাল কমিটি সদস্য দেবাশিস সিকদার বলেন, “তুরতুরি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে দিনরাত চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যেত। সেখানে শয্যা ছিল। কিন্তু ওই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছে। শয্যা চালু করার দাবিতে স্থানীয়দের তরফে কয়েক বার স্মারকলিপি দেওয়া হলেও লাভ হয়নি।”
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, তুরতুরি, ধামসিবাদ, ডাঙি, ধওলাবস্তি, পানবাড়ির মতো অন্তত ২৫টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল। এ ছাড়াও রয়েছে কোহিনূর, ধওলার মতো ৯টি চা বাগান এলাকার কয়েক হাজার শ্রমিক। তুরতুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান রোজবিন তিরকি এই প্রসঙ্গে বলেন, “প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হলেও পরিষেবা পৌঁছে দিতে এক সময় সেখানে শয্যা চালু হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা থাকতেন। কিন্তু ১৯৯৫ সাল নাগাদ ওই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অন্তত ১৫ হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছেন।” স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দিনরাত চিকিৎসা পরিষেবা চালুর দাবিতে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে কংগ্রেস। ওই দলের স্থানীয় নেতা সুবোধ দাস বলেন, “আমরা কয়েক দিন অপেক্ষা করব। দ্রুত আগের মতো পরিষেবা চালু না হলে আন্দোলনে নামব।” |