উচ্চ আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হলে তরাইয়ের চা বাগানগুলিতে রেশন ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর কথা ভাবছে খাদ্য সরবরাহ দফতর। মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মন্ত্রী বলেন, “তরাইয়ের চা বাগানগুলিতে রেশন ডিলার নিয়োগ নিয়ে উচ্চ আদালতে চলছে। সেই মামলার নিষ্পত্তি হোক। আদালতের নির্দেশ মেনেই চলব। তবে প্রয়োজনে স্বচ্ছতার স্বার্থে আরও একবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে গোড়া থেকেই ডিলার নিয়োগ করা কথা ভাবা হচ্ছে।
কেন এমন সিদ্ধান্তের কথা ভাবা হচ্ছে? খাদ্যমন্ত্রীর জবাব, “আগের ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সে জন্যই মামলা হয়। তাই স্বচ্ছতার বিষয়টিকেও অগ্রাধিকার দিতে হবে। সে জন্যই প্রয়োজনে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর কথাও ভাবছি। সবটাই নির্ভর করছে উচ্চ আদালতের রায়ের উপরে।” তরাইয়ের ৪১টি চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের সদস্য, যাদের নন ওয়ার্কার বলা হয়, তাঁদের রেশন সরবরাহ করতে ২০০৫ সাল থেকে ৪ দফায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবারই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে একাধিক অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের হয়। সে কারণে খাদ্য দফতর থেকে নতুন ডিলার নিয়োগ না করে পুরোনো ডিলারদেরই রেশন সরবারহের বরাত দিয়ে দেওয়া দেওয়া হয়। কারা এই বরাত পাবেন তা বাছাই প্রক্রিয়াও প্রায় চূড়ান্ত বলে খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রের খবর।
খাদ্য সরররাহ দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, উচ্চ আদালতও অর্ন্তবর্তী নির্দেশ দিয়ে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন বলে রেশন ডিলারদের একটি অংশ দাবি করেছে। সেই মত গত বছরের অগস্ট মাসে প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ডিলার নিয়োগের একটি প্রক্রিয়া শেষ করতে উদ্যোগী হয়। দার্জিলিঙ জেলার এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “আমরা যাবতীয় ফাইল রাজ্য দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখান থেকে যেমন নির্দেশ আসবে, তেমনিই কাজ হবে।” তরাইয়ের চা বাগানগুলিতে যত জন বাসিন্দা রয়েছেন, তার থেকে অন্তত ৫০ হাজার কার্ড বেশি রয়েছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে। ভুয়ো কার্ড খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে খাদ্য সরবরাহ দফতর। ভুয়ো কার্ডে বছরের পরে বছর বরাদ্দ রেশন কোথায় গিয়েছে, তা দেখতে মন্ত্রীর নির্দেশে আর একটি তদন্ত শুরু হয়। রাজ্যের খাদ্য কমিশনারকে সবকটি তদন্তের মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, চা বাগানের রেশন নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকায় মন্ত্রী নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ডুয়ার্সের বন্ধ চা বাগানে ভুয়ো কার্ড নিয়ে শুরু হওয়া তদন্তের রিপোর্ট হাতে চলে আসবে বলে আশা করছেন খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী। |