ধরা পড়ার ভয়ে আখিরা নদীতে জলে ঝাঁপ দিয়েছিলেন সুব্রত মাঝি নামে এক যুবক। আর উঠতে পারেননি সেখান থেকে। অভিযোগ, তাঁকে উঠতে দেওয়া হয়নি। তাঁর দেহ মেলেনি। মঙ্গলবার দুপুরে রঘুনাথগঞ্জের গদাইপুর গ্রামের কাছে ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গদাইপুরের কাছে এক টেলিফোন সংস্থার কেবল লাইন পোঁতার কাজ চলছিল। চার যুবককে তার আশেপাশে ঘুরতে দেখে চোর সন্দেহ করে তাড়া দেন ওই টেলিফোন সংস্থার ঠিকাদারের কর্মীরা। তিন জন পালিয়ে গেলেও সুব্রত নিজেকে বাঁচাতে পাশের ওই নদীতে ঝাঁপ দেন। নদীতে কচুরিপানা ভর্তি থাকায় আটকে যায় সে। বারবার তীরে আসার চেষ্টা করলেও ঠিকাদারের কর্মীরা তাঁকে উঠতে দেয়নি বলে অভিযোগ। রাত পর্যন্ত দেহ মেলেনি তাঁর। ওই যুবকের বাবা প্রীতম মাঝি রঘুনাথগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। সুব্রতর মা বলেন, “কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে ছেলে ওখানে এমনিই গিয়েছিল। ওকে তাড়া করে জলে ফেলে রাখা হল। একমাত্র ছেলের এমন দশা মানতে পারছি না।” রঘুনাথগঞ্জের আইসি সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ছেলেটি তাড়া খেয়ে জলে ঝাঁপ দেয়। তারপর আর ওঠেনি। তবে কী পরিস্থিতিতে ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হবে। নদীতে জাল ফেলে দেহের তল্লাশিও চালানো হবে।”
ঘটনার প্রতিবাদ করছেন শহরবাসীও। রঘুনাথগঞ্জ নাগরিক মঞ্চের সভাপতি কাশীনাথ ভকত বলেন, “স্রেফ চোর সন্দেহে এমন সাজা প্রাপ্য নয়। মানুষের হৃদয়ের বদল দরকার।” জঙ্গিপুর আদালতের সরকারি আইনজাবী অশোক সাহা বলেন, “আধুনিক জীবন যে মানুষকে হিংস্র করে তুলেছে এ ঘটনা তারই প্রমাণ।” গদাইপুরের পঞ্চায়েত সদস্য অঞ্জলি মাঝির অভিযোগ, “ছেলেটির সঙ্গে অমানবিক ব্যবহার করা হয়েছে। পরে গ্রামবাসীদের প্রতিবাদে ওই কর্মীরা পালালেও এমন ঘটনা মানা যায় না।”
কানুপুরের পঞ্চায়েত প্রধান মনিরুজ্জামান আরাফতের কথায়, “খবর পেয়েই ছেলেটির বাড়ি গিয়েছিলাম। অমানবিক ঘটনা। শুনেছি ওকে ঘিরে ধরে জল থেকে উঠতে দেওয়া হয়নি।” |