|
|
|
|
জাহিরের চোটে হঠাৎ জল্পনা |
দিন্দার ভাগ্য নির্ণয় আজ ইডেনে পৌঁছে |
রাজীব ঘোষ • কলকাতা |
ইডেনের ২২ গজে দেশের হয়ে আগুন ঝরানোর সুযোগ পাবেন ঘরের ছেলে?
হরভজনের জ্বর। এ দিন প্র্যাক্টিসেই আসতে পারলেন না। দুপুরে জাহির খানের চোট বাড়ার খবর চাউর হতেই উঠে গেল এই প্রশ্ন।
নৈছনপুর এক্সপ্রেস নিজে তৈরি। কিন্তু ইডেনে তাঁর টেস্ট অভিষেক ঘটবে কি না, এটাই ম্যাচের আগের রাত পর্যন্ত বাংলার ক্রিকেট মহলে কোটি টাকার প্রশ্ন। বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটাররা অবশ্য বলছেন, জাহির খেলতে পারুন বা না পারুন, দিন্দাকে ইডেনে নামানোই উচিত। কিন্তু ধোনি তো বলেই গেলেন, “বিশেষজ্ঞরা অনেক কিছুই বলেন। সব কিছু নিয়ে অত ভাবলে চলে না।”
টেস্ট শুরুর আগের দিন নেটে বেশি ঘাম ঝরালেন না জাহির। ভারতীয় দলের অগোছালো নেট প্র্যাক্টিসে দিন্দাও যে চুটিয়ে বল করেছেন, তা নয়। কিন্তু তখনও তো জানা ছিল না যে, জাহিরের ‘সাইড স্ট্রেইন’-এর সমস্যা হঠাৎ বেড়ে যাবে। দুপুরের দিকে জাহিরকে নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সাংবাদিকদের ঘনঘন ফোন যায় স্থানীয় ম্যানেজার সৈকত গোস্বামীর কাছে। সন্ধেয় টিম মিটিংয়ে অবশ্য তিনি উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেন ভারতীয় দলের ম্যানেজার সতীশ এবং জাহির সেখানে নিজে জানিয়েছেন, তিনি সুস্থ। তবে বুধবার সকালে কেমন থাকেন দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। |
|
প্র্যাক্টিসে দিন্দা। -নিজস্ব চিত্র |
অরুণ লাল অবশ্য মনে করেন, ক্রিকেট জীবনের একেবারে শুরু থেকে যেখানে খেলে আসছেন দিন্দা, সেই ইডেনে বাংলার উঠতি পেসারকেই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। “চেনা পরিবেশে জীবনের প্রথম টেস্ট খেলতে নামার সুবিধে যার রয়েছে, তাকে নামানোই তো উচিত।” ঘরোয়া টুর্নামেন্টে পারফরম্যান্সের দিক থেকেও যে, এই মুহূর্তে দিন্দা ইশান্তের চেয়ে অনেক এগিয়ে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই অশোক মলহোত্রর। “ইশান্তের পারফরম্যান্স কোথায়? দিন্দার পারফরম্যান্স ওর চেয়ে অনেক ভাল। সে জন্যই বাংলার এই পেসারকেই খেলানো উচিত ইডেনে।”
ধোনি অবশ্য সাংবাদিক সম্মেলনে দিন্দার খেলার সম্ভাবনা নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রেখেই বলেন, “এখানকার পরিবেশ ও উইকেটে যে সবচেয়ে বেশি মানানসই হবে তাকেই নামানো হবে।” এই যুক্তি অনুযায়ী তো দিন্দাই সেরা বাছাই, ধারণা রঞ্জিজয়ী বাংলার অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বললেন, “ইডেনে দিন্দার চেয়ে মানানসই আর কে হবে? ইশান্ত নয় অন্তত। ও অস্ট্রেলিয়ায় চারটে টেস্টে চারটে উইকেট পেয়েছে। জাহির খেলতে পারলেও ওর সঙ্গে দিন্দারই মাঠে নামা উচিত।” ইডেন বলেই যে দিন্দাকে খেলানো উচিত, তা অবশ্য মানতে রাজি নন বাংলার প্রাক্তন টেস্ট উইকেটকিপার দীপ দাশগুপ্ত। |
• অশোক মলহোত্র: জাহির খেলতে পারলেও ওর সঙ্গে ইশান্ত নয়, দিন্দাকেই খেলানো উচিত।
• সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়: ফিট জাহিরকে ভারতের ভীষণ প্রয়োজন আছে।
• সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়: ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেলেই জাতীয় দলে ফিরতে হয়। ইশান্ত তো সেটাও পারেনি।
• গোপাল বসু: ডিসেম্বরের সকালে ইডেনের উইকেট থেকে যে সুইং পাওয়া যায়, তা কাজে লাগাতে পারবে দিন্দা। |
|
দিন্দাদের বাংলা দলের প্রধান নির্বাচক বললেন, “ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট যদি মনে করে ইশান্ত দিন্দার চেয়ে অনেক এগিয়ে, তা হলে কিছু বলার নেই। কিন্তু যদি মনে করে, ইশান্ত-দিন্দার উনিশ-বিশ তফাত, তা হলে অবশ্যই দিন্দাকে খেলানো উচিত।” গোপাল বসু-র সাফ কথা, “এ বার না খেলালে আর কবে খেলাবে দিন্দাকে? এই টেস্টেও যদি ওকে মাঠে না নামানো হয়, তা হলে বুঝব, ওর বিরুদ্ধেও মনোজের মতো একটা নোংরা রাজনীতি চলছে।”
যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই দিন্দা অবশ্য সন্ধেয় টিম হোটেলের লবিতে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমি এই নিয়ে কী বলব বলুন? আমাকে মাঠে নামতে বললে নামব। আমি সব সময়ই তৈরি।” |
|
|
|
|
|