খেলার মাঠ বিক্রি হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। যদিও জমিটি আদৌ খেলার মাঠ কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। সরকারি নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। স্থানীয় প্রশাসনকে খোঁজখবর করে দেখতে বলেছেন ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র।
আরামবাগ পুর এলাকার বাসিন্দারা জানান, ২ নম্বর ওয়ার্ডের ওই মাঠটি তিল ডাঙা ফুটবল মাঠ নামে পরিচিত। বহু বছর ধরে সেখানে খেলাধূলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল মণ্ডল, শুভেন্দু সামন্ত, উত্তম মান্না, সঞ্জিত চোঙদার, সুকুমার মান্ডি, সুচিত্রা মিত্রেরা চান, ওই মাঠে খেলাধূলা হোক। তাঁদের অভিযোগ, মাঠটি নিজের সম্পত্তি বলে দাবি করে এক ব্যক্তি জমি বিক্রির চেষ্টা করছেন। জমি জরিপ করতে এসে বেশ কয়েক বার স্থানীয় মানুষের বাধায় ফিরতে হয়েছে লোকজনকে। |
আরামবাগের পুরপ্রধান গোপাল কচও বলেন, “মাঠটি পূর্বে নদীর চর ছিল বলে জানি। মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল সেনের আমলে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি দ্বারকেশ্বরের পাড়ে কিছু জমি নিজেদের নামে দখল নেয়। তবে গত তিরিশ বছর ধরে পুরপ্রধান থাকা সুবাদে দেখে আসছি, ওই মাঠে খেলাধূলাই হয়। পুরসভাই মাঠের সংস্কার করে। দু’দিকের গোলপোস্ট দু’টিও পুরসভার তরফে দেওয়া।” পুরপ্রধানের বক্তব্য, “মাঠটি বেদখল হয়ে যাক, পুরসভাও তা চায় না।” মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “বিষয়টি দেখা হচ্ছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।” সরকারি নথিতে জমির চরিত্র কী, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের মহকুমা আধিকারিক লক্ষ্মণচন্দ্র ঘোষ।
জিয়াউর রহমান নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ওই জমি কেনার তোড়জোড় শুরু করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের দলিল খতিয়ে দেখেই উদ্যোগী হয়েছি। এলাকাবাসীর অন্যায় বাধায় মাঠটি সংস্কার করা যাচ্ছে না। জমির দখল এখনও নিতে পারিনি।” তাঁর কটাক্ষ, “কেউ অন্যের জায়গায় এসে খেললেই কি সেটা খেলার মাঠ হয়ে গেল?” প্রসঙ্গত, পুকুর ভরাটের অভিযোগে রবিবারই গ্রেফতার হয়েছিলেন জিয়াউর। পরে জামিনে ছাড়া পান।
মাঠের মালিক বলে নিজেকে দাবি করে কোর্টপাড়ার বাসিন্দা শ্যামল মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুরপ্রধান ঠিক বলেননি। ওই এক বিঘা জায়গাটি ১৯৮৪ সালে আমার কেনা। দীর্ঘ দিন ধরেই বিক্রির চেষ্টা করছি। কিন্তু গোলপোস্ট পুঁতে দিয়ে সেটি খেলার মাঠ বলে প্রমাণের চেষ্টা হচ্ছে। আনুমানিক ৩ কোটি টাকা মূল্যের ওই জায়গা আমাকে জলের দরে বিক্রি করতে হতে পারে।” তাঁর সংযোজন, “আইনই বলে দেবে, মাঠ কার।” ১৯৮৪ সালে ওই জমি কার কাছ থেকে কিনেছিলেন, তার স্পষ্ট উত্তর দেননি শ্যামলবাবু। |