বিকল কম্পিউটার,
খোঁড়াচ্ছে পুর-পরিষেবা
কেই বলে গোদের উপরে বিষফোঁড়া! এক দিকে যখন তীব্র অর্থসঙ্কটে ভুগছে হাওড়া পুরসভা, তখন স্রেফ কর্মচারীদের ভুলে কম্পিউটার খারাপ হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে হাওড়া শহরের জমি-বাড়ির ট্যাক্স নির্ধারণ, নকশা অনুমোদন ও সম্পত্তি মিউটেশনের কাজ। এক দিন বা দু’দিন নয়, টানা দেড় বছর। এ জন্য পুরসভার রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ ১৫ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। সম্পত্তির মিউটেশন ও ট্যাক্স জমা দেওয়ার শংসাপত্র নিতে এসে নাজেহাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
গত এক বছর ধরে মিউটেশনের টাকা জমা দেওয়ার জন্য পুরসভায় হন্যে হয়ে ঘুরছেন শোভন বসাক। কিন্তু টাকা জমা দিতে না পারায় বাড়ি তৈরির জন্য ব্যাঙ্ক ঋণও পাচ্ছেন না তিনি। এমনই অবস্থা হয়েছে সুমন দাসেরও। বকেয়া ট্যাক্স জমা দেওয়ার সার্টিফিকেট না পাওয়ায় একই ভাবে তাঁকেও ঋণ দিচ্ছে না ব্যাঙ্ক। সুমনবাবুদের মতো অবস্থা হয়েছে অনেকের। কেউ কেউ কর জমা না দিতে পারায় ফ্ল্যাট তৈরি করতে পারছেন না, কেউ আবার জমির মিউটেশন হওয়ার পরে টাকা জমা দিতে না পারায় নকশা অনুমোদনের আবেদন করতে পারছেন না।
অভিযোগ উঠেছে, রাজস্ব আদায়ের মূল উৎস এ ভাবে রুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় হাওড়া শহরে উন্নয়নমূলক কাজ করা দূরের কথা, কর্মচারীদের বেতন দিতেই হিমশিম খাচ্ছে পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ওই কম্পিউটার চালু করার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বি ই কলেজ-সহ রাজ্যের কয়েকটি কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে নিয়োগ করে লক্ষাধিক টাকা খরচ করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
কেন এই হাল? পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে পুরসভার তথ্য প্রযুক্তি দফতর ক্যাজুয়াল ভিত্তিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষিত দুই কর্মীকে চাকরিতে নিয়োগ করে। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে এক জন চাকরি ছেড়ে চলে যান। আর এক জন কর্মীর দাবি মতো বেতন পুরসভা দিতে না চাওয়ায় তিনিও এক বছরের মধ্যে চাকরি ছেড়ে দেন। অভিযোগ, ওই কর্মী চলে যাওয়ার পরে তাঁর জায়গায় কম্পিউটার জানা কোনও দক্ষ কর্মী নিয়োগ না করে সাধারণ কর্মীদের দিয়ে কাজ করাতে গিয়ে বিপাকে পড়েন পুর-কর্তৃপক্ষ। দেখা যায়, কম্পিউটারের ‘সোর্স কোড’ না জেনে ব্যবহার করায় পুরো ‘সিস্টেম’ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে কম্পিউটার খোলা যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরসভার এক অফিসার বলেন, “পুরসভার এমনিতেই হাড়ির হাল। পরিস্থিতি যা, এখন সমস্ত তথ্য নতুন করে কম্পিউটারে ঢোকাতে হবে। আর তা করতে গেলে কয়েক কোটি টাকা খরচ হবে। তার টাকা কোথায়!”
কিন্তু এতদিন ধরে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা নেওয়া গেল না কেন?
হাওড়া পুরসভার মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “আমরা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে নানা ভাবে চেষ্টা করেছি। কিন্তু কেউই কিছু করতে পারেননি। টেন্ডার ডেকে এ বার একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যায়, মাস দুয়েকের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.