আলিমুদ্দিনে কেন্দ্রীয় কমিটি
লোকসভা ভোটের সলতে পাকাতে হাজির কারাটেরা
হাতে সময় থাকতেই আগামী লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল তৈরির কাজ শুরু করে দিচ্ছে সিপিএম। এই লক্ষ্যে আগামী মাসেই কলকাতায় বসছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। যাতে লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরুর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য উপস্থিত থাকতে পারেন। কোঝিকোড়ে সিপিএমের বিগত পার্টি কংগ্রেসের পরে এই প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটি বসছে কলকাতায়।
সিপিএম সূত্রের খবর, আগামী ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক বসবে আলিমুদ্দিনে। সেই বৈঠকের আলোচ্যসূচিতেই রয়েছে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি। এ ছাড়াও, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দলের মহিলা ফ্রন্টের কার্যকলাপ ওই বৈঠকের আলোচ্য। তার আগে অবশ্য কাল, বৃহস্পতি ও পরশু, শুক্রবার দিল্লিতে দলের পলিটব্যুরোর বৈঠক রয়েছে। যেখানে এফডিআই-প্রশ্ন এবং সেই সূত্র ধরে অ-কংগ্রেস ও অ-বিজেপি দলগুলির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে এক প্রস্ত আলোচনা হওয়ার কথা। পলিটব্যুরোর এই বৈঠকের বেঁধে দেওয়া সুর ধরেই কলকাতায় লোকসভা ভোটের সলতে পাকানো শুরু করবে কেন্দ্রীয় কমিটি।
কোঝিকোড়ে গত এপ্রিলে দলের নতুন পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হওয়ার পরে এই দুই শীর্ষ কমিটির কোনও বৈঠকেই যাননি বুদ্ধবাবু। শারীরিক কারণে তিনি এখনও কলকাতার বাইরে বৈঠকে হাজিরা দিতে অপারগ। মূলত বুদ্ধবাবুর জন্যই গত কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তত একটি বৈঠক কলকাতায় নিয়ে আসছেন প্রকাশ কারাটেরা। সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যায়, কলকাতার এ বারের বৈঠকে লোকসভা ভোটের প্রস্তুতির বিষয়টি এনে ফেলা হয়েছে, যাতে বুদ্ধবাবু আলোচনায় অংশ নিতে পারেন।
দলের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা অবশ্য অন্য। পলিটব্যুরোর এক সদস্যের বক্তব্য, “ওই সময় দিল্লিতে খুব ঠান্ডা। সেই জন্য শীত কালে দিল্লির বাইরে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের রেওয়াজ রয়েছে। আর পশ্চিমবঙ্গ আমাদের দলের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য।”
পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি এখন জোর কদমে চলছে রাজ্য সিপিএমে। তার পাশাপাশিই এ বার লোকসভা ভোটের কৌশলগত প্রস্তুতিতে হাত দিতে হবে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, “লোকসভা নির্বাচনের সাংগঠনিক প্রস্তুতি এই বৈঠকে আলোচনা হবে না। এখানে সম্ভবত লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে দলের কৌশলগত লাইন ঠিক করার চেষ্টা হবে। অ-কংগ্রেস এবং অ-বিজেপি শক্তিকে কী ভাবে সংহত করা যায়, আলোচনায় আসবে সে সব।”
আগামী লোকসভা নির্বাচনের পরে তেমন পরিস্থিতি হলে বিজেপি-র ক্ষমতায় আসা ঠেকাতে প্রয়োজনে ফের কংগ্রেসকে সমর্থন দেওয়ার পক্ষপাতী সিপিএম নেতৃত্বের একাংশ। কিন্তু সেই সম্ভাব্যতা নিয়ে এখন থেকেই প্রকাশ্যে হইচই করতে রাজি নন তাঁরা। কংগ্রেস-বিরোধিতার পরিসর হাতছাড়া করলে এই মুহূর্তে এ রাজ্যে তৃণমূল নেত্রীরই সুবিধা হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
আপাতত তাই সিপিএমের লক্ষ্য, কংগ্রেসের জন্য দরজা খোলা রেখেই অ-কংগ্রেস এবং অ-বিজেপি দলগুলিকে একজোট করা। তার পরে সিদ্ধান্ত হবে পরিস্থিতি অনুযায়ী। একই সঙ্গে সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত, লোকসভা ভোটের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী চিহ্নিত করার কাজ এখন থেকে শুরু করার জন্য রাজ্য কমিটিগুলিকে নির্দেশ দিতে পারে কেন্দ্রীয় কমিটি।
লোকসভা নির্বাচনের জন্য নিজেদের তৈরি করতে নামলেও দলের মহিলা ব্রিগেড নিয়ে খুব স্বস্তিতে নেই সিপিএম। বারবার চেষ্টা করেও খুব বেশি মহিলা মুখ সংগঠনের সামনের সারিতে তুলে আনা যায়নি। এ বারের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অবশ্য মহিলা সদস্যের সংখ্যা তুলনায় বেশি হলেও গোটা দলে ছবিটা আশাব্যঞ্জক নয়। বৃন্দা কারাট, সুভাষিনী আলিদের সামনে এখন লক্ষ্য, দলের প্রমীলা বাহিনী শক্তিশালী করা। কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে মহিলা ফ্রন্টের দিকেও।
মহিলা ব্রিগেডের জোর বাড়াতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শহরের চেয়ে উপযুক্ত আলোচনা-ক্ষেত্র আর কী-ই বা হতে পারত!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.