|
|
|
|
সাম্প্রদায়িক দলের তকমা এখনও কাল বিজেপি-র |
দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় • নয়াদিল্লি |
খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিষয়কে সামনে রেখে কংগ্রেস-বিরোধিতার তাস খেলতে চেয়েছিল বিজেপি। অ-কংগ্রেসি দলগুলিকে একজোট করে গোটা দেশ জুড়ে আন্দোলন গড়তে চেয়েছিল তারা। কিন্তু আগামিকাল লোকসভায় ভোটাভুটির আগেই লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলিরা আজ হাড়ে হাড়ে টের পেলেন, সাম্প্রদায়িকতার ভূত জাতীয় রাজনীতিতে এখনও তাঁদের নিঃসঙ্গ করে রেখেছে।
বিজেপি নেতৃত্ব চাইছিলেন, জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলন বা তার পর বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের সময় যেভাবে কংগ্রেস বিরোধী শক্তিকে একজোট করা সম্ভব হয়েছিল, এ বারেও খুচরো ব্যবসার ইস্যুতে সেই শক্তিগুলিকে একত্রিত করে কংগ্রেস বিরোধী আন্দোলনে নামা যাবে। কিন্তু আজ অধিবেশন শুরুর আগেই সংসদীয় মন্ত্রী কমলনাথ বললেন, খুচরো ব্যবসায় বিজেপির বিরোধ নিছক রাজনীতির। সাম্প্রদায়িক বিজেপি ধর্মনিরপেক্ষ কংগ্রেস সরকারকে অস্থির করতে চায়। বামেরাও ভোটাভুটি চায়। কিন্তু তাদের নামমাত্র না করে মনমোহন সরকার এটিকে বিজেপির দাবিতে পর্যবসিত করল। যাতে সকলে সাম্প্রদায়িক বিজেপির হাত না ধরে ধর্মনিরপেক্ষ কংগ্রেসের পাশে থাকে।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর থেকেই বিজেপিকে ‘সাম্প্রদায়িক’ অ্যাখ্যা দিয়ে তাদের রাজনৈতিক ভাবে একঘরে করার কৌশল নিয়ে এসেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। আর দু’দিন পরেই সেই কাণ্ডের বর্ষপূর্তি। তার আগে আজ লোকসভায় বিতর্কের সময় বিজেপি নেতারা কী দেখলেন? মুলায়ম, মায়াবতী থেকে করুণানিধি আজ স্পষ্ট করে দিলেন, খুচরো ব্যবসায় বিরোধিতা থাকলেও ‘সাম্প্রদায়িক’ বিজেপির সঙ্গে ভোট দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অথচ মুলায়ম থেকে মায়াবতী, নবীন থেকে মমতা খুচরো ব্যবসা নিয়ে বিরোধিতায় সরব প্রত্যেকেই। কংগ্রেস-হঠাও অভিযানের এমন সুবর্ণ সুযোগ থাকতেও সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে সকলেই রণে ভঙ্গ দিলেন। ডিএমকে, এনসিপির মতো দলগুলিও নানা বিষয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে থাকলেও বিজেপি-র ধারেকাছে ঘেঁষছে না। মায়াবতী বা মুলায়ম সকলেই সরকারের পক্ষে ভোট দেবেন, এমন নয়। কিন্তু তাঁরা অন্তত এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সাম্প্রদায়িক বিজেপির সঙ্গে তাঁদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।
আর এখানেই আশঙ্কায় বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ, খুচরো বিতর্ক থেকেও এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে তাঁদের ভবিষ্যতের রাজনীতিতে। সুষমা স্বরাজ আজ হিন্দিতে বক্তৃতা দিয়ে গরিব কৃষক ও ছোট ব্যবসায়ীদের দুঃখের ভাগীদার হতে চেয়েছিলেন। বিরোধীদের সঙ্গী করে কংগ্রেসকে কোণঠাসা করার বিস্তর কৌশলও রচনা হয়েছিল। কিন্তু সেই বিজেপি নেতৃত্বের এখন আশঙ্কা, খুচরো নিয়েই যদি রাজনৈতিক ভাবে একঘরে হতে হয়, তা হলে লোকসভার আগে এই বিড়ম্বনা বাড়বে বই কমবে না। নরেন্দ্র মোদী আসুন বা না আসুন, ‘সাম্প্রদায়িকতা’র জুজুতে এখন থেকেই রাজনৈতিক দলগুলি দূরে সরতে শুরু করেছে! এটি কোনও শুভ লক্ষণ নয় বিজেপির পক্ষে। |
|
|
|
|
|