কোনও ভাবেই মালে বিমানবন্দর আধুনিকীকরণের দায়িত্বে ভারতীয় সংস্থা জিএমআর-কে রাখা হবে না। মঙ্গলবার এ কথা ফের স্পষ্ট করে দিয়েছে মলদ্বীপ। যদিও ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত করতে বিষয়টি নিয়ে এ দিনই ভারতের বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন মলদ্বীপের বিদেশমন্ত্রী আবদুল সামাদ আবদুল্লা।
আবদুল্লার দাবি, জিএমআর-এর বরাত বাতিল নিয়ে ভারত যে অসন্তুষ্ট, এ কথা তাঁরা জানতেন না। যদিও বরাত বাতিলের খবরটি জানার পরই নিজেদের আপত্তির কথা স্পষ্ট করেছিল ভারত। এই সিদ্ধান্ত যে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে, এ দিন সেই আশঙ্কা প্রকাশ করেন খুরশিদ। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই মলদ্বীপকে যাবতীয় অনুদান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। বরাত বাতিল নিয়ে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ ওয়াহিদ বিস্তারিত রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কাছে পাঠাবেন বলেও জানান আবদুল্লা।
তবে এত কিছু সত্ত্বেও, আগামী শনিবার থেকে বিমানবন্দর পরিচালনার সমস্ত দায়িত্ব যে তারাই নেবে, সে কথাও রাতে স্পষ্ট জানিয়েছে মলদ্বীপ সরকার। বিমানবন্দর হাতে নিতে ক্ষতিপূরণ-সহ অন্যান্য বিষয়ে সংস্থার সঙ্গে বিস্তারিত কথা হয়েছে বলেও দাবি তাদের। মলদ্বীপের প্রতিরক্ষা ও অস্থায়ী পরিবহণ মন্ত্রী মহম্মদ নাজিম জিএমআর কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সরকার। উল্টো দিকে, বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও, সেখানে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিয়ে কোনও কথা হয়নি বলে অভিযোগ জিএমআর-এর। বুধবারও দু’পক্ষের আইনজীবীদের নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা, জানিয়েছে সংস্থা।
একই সঙ্গে জিএমআর-এর অবশ্য দাবি, মলদ্বীপ সরকারের হাতে কোনও ভাবেই বিমানবন্দরের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে না। সে ক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থরক্ষায় সব রকম আইনি পরামর্শ নেওয়া হবে। সংস্থা জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী ডাকা দরপত্রের মাধ্যমে বরাত পেয়েই এখানে কাজ করতে এসেছে তারা। কোনও ক্ষতিপূরণ পেতে নয়। এমনকী তাদের দাবি, ২০১০-এর চুক্তি অনুসারে বরাত বাতিল করতে হলে মলদ্বীপ সরকারকে জিএমআর-এর কাছে ৬০ দিনের নোটিস দিতে হবে। জিএমআর-এর ঋণদাতা অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের স্বার্থ যাতে রক্ষা হয়, তা দেখার দায়িত্বও থাকবে মলদ্বীপের উপর। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানেনি মলদ্বীপ। উল্লেখ্য, চুক্তি বাতিল করলে জিএমআর-কে ৪০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য মলদ্বীপ।
এ দিকে, জিএমআর-এর চুক্তি বাতিলের বিষয়টি নিয়ে মলদ্বীপ সরকারের উপর কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে ভারতকে আর্জি জানিয়েছে শিল্পমহল। আবেদন করেছে, কেন্দ্র যাতে সার্ক দেশগুলির মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে মলদ্বীপকে চাপ দেয়। মালের সিদ্ধান্তে একই সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং সে দেশে লগ্নিকারীদের আস্থার উপর যে বিরূপ প্রভাব পড়বে, তাও স্পষ্ট করেছে তারা। একই মন্তব্য করে মলদ্বীপকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে আবেদন করেছে সিআইআই-ও। |