গ্রামের প্রত্যেকটি পাড়ায় দু’টি-তিনটি করে নলকূপ রয়েছে। যদিও তার মধ্যে অধিকাংশই খারাপ। নিকাশি বেহাল। রাস্তা মোরামের হলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ মোরামের অভাবে তা এবড়ো- খেবড়ো। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই সেগুলি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এমনই অভিযোগ বুদবুদের শালডাঙা গ্রামের বাসিন্দাদের। তাঁদের আরও অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বার বার জানিয়েও ফল মেলেনি। প্রয়োজনে তাঁরাই চলাচলের উপযোগী রাস্তা তৈরি করে নিচ্ছেন। যদিও স্থানীয় চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতের প্রধান আভা ভট্টাচার্যের দাবি, এলাকায় অনেক কাজ হয়েছে। তবে এখনও কিছু বাকি রয়েছে।
নস্করবাঁধ-রণডিহা রাস্তার পাশেই শালডাঙা গ্রাম। ভোটারের সংখ্যা অন্তত ১৯০০। গ্রামটি আয়তনেও বেশ বড়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রামের আয়তনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সমস্যাও। মূলত কৃষির উপরে নির্ভরশীল এই গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁদের গ্রামে উন্নয়নমূলক কাজ যা হয়েছে তাকে ভাল বলা যায় না। গ্রামের প্রত্যেক পাড়ায় নলকূপ রয়েছে। কিন্তু সেগুলির বেশির ভাগই খারাপ হয়ে পড়ে থাকে। কাজেই পানীয় জলের জন্য অন্য পাড়ার নলকূপই ভরসা। গ্রামবাসীদের দাবি, স্থানীয় পঞ্চায়েত যদি সজলধারা প্রকল্পের মাধ্যমে পানীয় জলের ব্যবস্থা করত তাহলে অনেক মানুষেরই উপকার হত। তাঁদের আরও অভিযোগ, মোরামের রাস্তা হলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ মোরাম না দেওয়ায় রাস্তার অধিকাংশ জায়গা খানাখন্দে ভর্তি। |
স্থানীয় রুইদাসপাড়ার বাসিন্দা তথা তৃণমূল সমর্থক শঙ্কর রুইদাসের দাবি, “চাষের সময়ে পাড়ার রাস্তা দিয়ে আশপাশের গ্রামের মানুষও যাতায়াত করেন। একটু বৃষ্টি হলেও গোটা রাস্তা কাদাতে ভর্তি হয়ে যায়। চাষের প্রয়োজনে গরুর গাড়ি বা ট্রাক্টর চললে এই রাস্তায় চলাফেরা করাই দায় হয়ে যায়।” পঞ্চায়েতকে জানিয়ে লাভ না হওয়ায় রুইদাসপাড়া থেকে আঁকুড়েপাড়া পর্যন্ত রাস্তাটি স্থানীয় ক্লাবের সদস্যেরাই তৈরি করে নিয়েছেন, এমনই দাবি রুইদাসপাড়ার বাসিন্দাদের। শুধু রাস্তা বা নলকূপই নয়, গ্রামের আর এক প্রধান সমস্যা হল নিকাশি। কোথাও কোথাও পাকা নিকাশি রেছে। যদিও তা দৈঘ্যে বেশ কম। গ্রামের বাসিন্দা জিতেন রুইদাস, তপন রুইদাস, শঙ্কর রুইদাসদের দাবি, “কোথাও ত্রিশ ফুট। আবার কোথাও ৫০ ফুট পাকা নিকাশি রয়েছে। কিন্তু গোটা এলাকায় পাকা নিকাশি না থাকায় মাঝেমধ্যেই রাস্তায় জল জমে যায়।”
গ্রামের রুইদাসপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, ওই পাড়ায় বসবাস ১২০টি পরিবারের। তিনটি নলকূপ থাকলেও কাজ করে মাত্র একটি। ফলে অন্য পাড়া থেকে জল নিয়ে আসতে হয় বাসিন্দাদের। পাকা নিকাশি খুবই কম। ফলে বেশিরভাগ জায়গায় রাস্তার উপর জল দাঁড়িয়ে থাকে। কোনও কোনও জয়গায় বাড়ির পাঁচিলও এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। স্থানীয় তৃণমূল নেতা অনুপ দে অভিযোগ করেন, উন্নয়নের ছিটেফোঁটাও নেই গ্রামে। তাঁর অভিযোগ, “বারবার পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শুধুই আশ্বাস মিলেছে।” উন্নয়ন যে কিছুই হয়নি সে কথা মানতে রাজি নন চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতের প্রধান আভা ভট্টাচার্য। তিনি জানান, তাঁর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বিভিন্ন গ্রামে প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। শালডাঙা গ্রামের পাকা নিকাশির সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কিছু বাধ্যবাধকতার জন্য পুরো গ্রামে পাকা নিকাশির ব্যবস্থা করা যায়নি। তবে আমি চেষ্টা চালিয়ে যাব।” |