সিঙ্গুরকে সামনে রেখে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে রাজ্য কংগ্রেসকে সবুজ সঙ্কেত দিল হাইকম্যান্ড।
সিঙ্গুরকে মূলধন করে শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতার মাধ্যমে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন সেই সিঙ্গুরই যাতে ব্যুমেরাং হয়ে তৃণমূলকে ধরাশায়ী করে, সে জন্য সক্রিয় কংগ্রেস। এই নিয়ে আজ প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নান-সহ রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ। পরে প্রদীপবাবু জানান, সিঙ্গুর নিয়ে শীঘ্রই আন্দোলনে নামবে কংগ্রেস। দলের বক্তব্য হবে, সিঙ্গুরে অরাজকতা চলছে। আইনের শাসনও মানতে চাইছেন না খোদ তৃণমূলের স্থানীয় মন্ত্রী। এতে আখেরে ক্ষতি হচ্ছে রাজ্যের। শিল্প মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। এই অবস্থায় কংগ্রেস চাইছে, আদালতের বাইরে টাটার সঙ্গে আলোচনায় বসে দ্রুত বিরোধ মীমাংসা করুন মমতা। কারণ, সিঙ্গুরে অনিচ্ছুক চাষি যেমন রয়েছেন, তেমন আছেন ইচ্ছুকরাও, যাঁরা স্বেচ্ছায় জমি দিয়ে চেক নিয়েছেন। তাঁরা চাইছেন, সিঙ্গুরে শিল্প হোক। তাঁদের পরিবারের এক জন সদস্যের সেখানে কর্মসংস্থান হোক। কিন্তু রাজ্য সরকার যে অবস্থান নিয়ে চলছে, তাতে তাঁরা আরও বিপন্ন হয়ে পড়ছেন।
তবে শুধু সিঙ্গুর নয়, মন্ত্রিসভা থেকে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ইস্তফা থেকে শুরু করে উপর্যুপরি দলীয় কোন্দল নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব যখন বিপর্যস্ত, তখন পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সার্বিক ভাবে আন্দোলনে নামতে চাইছে কংগ্রেস। এ ব্যাপারে রণকৌশল নির্ধারণের জন্য রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের দিল্লি ডেকে পাঠিয়েছে হাইকম্যান্ড। পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেন্দ্রে কংগ্রেসের তিন প্রতিমন্ত্রী এবং বাকি সাংসদ ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের নিয়ে আগামিকাল সন্ধ্যায় দিল্লির ইসলামিক সোসাইটি সভাগৃহে বৈঠক করবেন শাকিল আহমেদ। তার আগে শাকিল আজ বলেন, “কেন্দ্রে ও রাজ্যে তৃণমূল এখন কংগ্রেসের শরিক নয়। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়বে কংগ্রেস।”
আজ একই কথা জানান কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী জয়রাম রমেশও। ৮ ডিসেম্বর লালগড়ে কংগ্রেসের সভার নেতৃত্ব দেবেন জয়রাম। তিনি বলেন, “বস্তুত ওই দিন থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নেমে পড়বে কংগ্রেস। রাজ্য থেকে কেন্দ্রের তিন প্রতিমন্ত্রী-সহ প্রদেশ কংগ্রেসের সব নেতা ওই দিনের সভায় উপস্থিত থাকবেন। পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নে কেন্দ্র কত টাকা পাঠাচ্ছে, আর রাজ্যেরই বা কী পারফরম্যান্স, তা-ও তুলে ধরবে কংগ্রেস।” এ ব্যাপারে প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তি-তর্ক সাজিয়ে প্রচার করতে পারে, তা নিয়ে তাঁদের পরামর্শ দিচ্ছেন জয়রাম।
এর মধ্যে প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা আজ বলেন, কেন্দ্র থেকে মমতা সমর্থন প্রত্যাহার করায় অন্তত
মমতা-বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে রাজ্য কংগ্রেসে ঐক্য ফিরে এসেছে। |