রাস্তা সংস্কারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পথ অবরোধ করে আন্দোলনে নামলেন বাসিন্দারা। সোমবার সকাল থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার সুলতান নগর থেকে গোপীগঞ্জ রুটে রাস্তা অবরোধে প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ যোগ দেন। অবরোধের ফলে সোমবার রুটে বাস, ট্রেকার বন্ধ হয়ে যায়। এলাকার মানুষ অবরোধে সমস্যায় পড়লেও আন্দোলনকেই সমর্থন করেছেন তাঁরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেন, চলতি সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে রাস্তার কাজ।
প্রশাসন ও পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, সুলতান নগর থেকে গোপীগঞ্জ—দশ কিলোমিটারের এই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আরআইডিএফ প্রকল্পে ৪ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে ভগ্নপ্রায় ওই রাস্তাটি সংস্কারের বরাত দেওয়া হয় একটি বেসরকারি সংস্থাকে। সংস্কারের পর রাস্তাটি চওড়ায় ১৮ ফুট এবং ২০ মিলিমিটার পুরু হওয়ার কথা। পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, ছ’মাসের মধ্যে রাস্তাটি শেষ করার কথা কিন্তু প্রায় এক বছর হতে চলল, এখনও কাজ শেষ হয়নি। |
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাস্তাটির উপর দাসপুর-১ ও ২ ব্লকের প্রায় শতাধিক গ্রামের মানুষ নির্ভরশীল। স্কুল, কলেজ, বিডিও অফিস-সহ ব্লক স্তরের অনান্য দফতর ও একাধিক পঞ্চায়েত অফিস যেতে হলেও ওই রাস্তাই একমাত্র ভরসা। এছাড়া রাস্তার উপর দিয়ে প্রতি আধ ঘন্টা ছাড়া বাস ও প্রতিদিন ২৫-৩০ টি ট্রেকার চলাচল করে উপ-নিবার্চনের আগে গোটা রাস্তার পুরানো পিচ তুলে একেবারে নতুন ভাবে করার জন্য মোরাম পযর্ন্ত বের করে তাতে চিপস ছড়িয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, সরকারি নজরদারির অভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তাটি অত্যন্ত ঢিমেতালে শুরু হয়। সোনাখালি পযর্ন্ত কাজ হওয়ার পর গত তিন মাস আচমকাই বন্ধ হয়ে যায়। এলাকার মানুষের অভিযোগ, এত টাকা খরচ করে কাজ হলেও যে সাত কিলোমিটার কাজ হয়েছে তার হাল ইতিমধ্যেই খারাপ। নতুন হওয়া রাস্তার অর্ধেক জায়গায় পিচ উঠে গিয়ে ফের মোরাম বেরিয়ে গিয়েছে। আর বাকিটা অর্থাৎ চাঁইপাট থেকে গোপীগঞ্জ পযর্ন্ত চিপস দেওয়া অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। ফলে ওই রাস্তার উপর দিয়ে চলাচল করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাস বা গাড়ি চলাচল করলে ধুলোয় ভর্তি হয়ে যাচ্ছে এলাকা। বারবার প্রশাসনের কাছে আবেদন করেও কাজ শুরু না হওয়ায় এই আন্দোলন বলে জানান আন্দোলনকারীরা। তাঁদের পক্ষে চাঁইপাট হাটতলার বাসিন্দা পুলক সামন্তের অভিযোগ, “রাস্তাটি অতি গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু হাল অত্যন্ত খারাপ। দুর্ঘটনা লেগেই আছে। প্রশাসনকে বহুবার আমরা জানিয়েছি। কাজ না হওয়ায় কষ্ট হবে জেনেও বাস বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।” |