|
|
|
|
হোমগার্ডের চাকরি আত্মসমর্পণকারীদের |
সুমন ঘোষ • মেদিনীপুর |
চাকরির দাবি নিয়ে গত ৩ নভেম্বর কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন আত্মসমর্পণকারী দুই মাওবাদী। তারপর এক মাস কাটতে না কাটতেই আত্মসর্পণকারী মাওবাদীদের হোমগার্ড পদে নিয়োগের নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। ‘স্পেশাল ক্যাটেগরি অফ পারসনস্’ হিসেবে এঁদের নিয়োগ করা হবে। এ জন্য একটি কমিটি গড়ারও নির্দেশ দিয়েছে সিভিল ডিফেন্স ডিপার্টমেন্ট। পুলিশ সূত্রে খবর, চলতি মাসেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি সুনীল চৌধুরী বলেন, “দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফেরাতে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘোষণা করা হয়েছিল নির্দিষ্ট প্যাকেজ। তার মধ্যে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতিও ছিল। বলা হয়েছিল, গাড়ি চালানো, সেলাই, কম্পিউটারের খুঁটিনাটি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। যাতে আত্মসমর্পণকারীরা উপযুক্ত কাজ খুঁজে নিতে পারেন। পুলিশ সূত্রের খবর, আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীরা এতে সন্তুষ্ট হননি। তাঁরা সরাসরি চাকরির দাবি তোলেন। চাকরির দাবি নিয়েই মেদিনীপুর পুলিশ লাইন থেকে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন আত্মসমর্পণকারী দুই মাওবাদী চিরঞ্জীব মাহাতো ও সুখদেব মাহাতো। তারপরই তড়িঘড়ি চাকরির ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয় সরকার।
এখনও পর্যন্ত জঙ্গলমহলের ৩৩ জন মাওবাদী নেতা-নেত্রী আত্মসমর্পণ করেছেন। সেই তালিকায় সুচিত্রা মাহাতো, জাগরী বাস্কে, রাজারাম সরেন, শোভা মান্ডির মতো প্রথম সারির নেতা-নেত্রীরাও আছেন। এঁরা আপাতত পুলিশি নজরদারিতেই। থাকা, খাওয়া, চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহের সঙ্গে তাঁদের মাসে দু’হাজার টাকা করে ভাতাও দেওয়া হয়। তা ছাড়া, আত্মসমর্পণ প্যাকেজের শর্ত মেনে সকলের নামে দেড় লক্ষ টাকা করে স্থায়ী আমানত করে দেওয়া হয়েছে। এ বার দেওয়া হচ্ছে চাকরিও। পুলিশ সূত্রে খবর, হোমগার্ড পদে নিয়োগ হলেও এই চাকরি চুক্তিভিত্তিক হবে না। থাকবে নির্দিষ্ট বেতন।
নিয়োগ প্রক্রিয়া দেখভাল করবে ৩ জনের একটি কমিটি। কমিটির চেয়ারম্যান আইজি (পশ্চিমাঞ্চল)। বাকি দুই সদস্য, হোম গার্ড কমান্ডান্ট জেনারেলের প্রতিনিধি হিসেবে বর্ডার উইং হোমগার্ডের কমান্ডান্ট ও সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার। এই কমিটি আত্মসমর্পণকারীদের যোগ্যতা, বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা দেখে সিদ্ধান্ত নেবে কাদের চাকরি দেওয়া যাবে। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীরা যে জেলার বাসিন্দা, সেই জেলাতেই তাঁদের চাকরি দেওয়া হবে। |
|
|
|
|
|