দিল্লির হলদিয়া দর্শন
এবিজি’র অভিযোগের প্রতিধ্বনি রিপোর্টে
রাজনৈতিক চাপে প্রয়োজনাতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ, বন্দরের ভিতরে শ্রমিক অসন্তোষ এবং বাইরে প্রতিকূল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে এবিজি-র হলদিয়া ছাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা। তাঁরা চান, হলদিয়া বন্দরের স্বার্থে এবিজি-কে ফিরিয়ে আনতে কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হোন।
এবিজি-র তিন কর্তাকে অপহরণ করে হলদিয়া থেকে তাড়ানোর অভিযোগ ওঠার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাকরণে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ওখানে কিছুই হয়নি। তা সত্ত্বেও প্রদেশ কংগ্রেস এবং রাজ্যের দুই কংগ্রেসি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি মেনে সরেজমিনে পরিস্থিতি যাচাইয়ে হলদিয়ায় প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। দলের সদস্য হিসেবে জাহাজ মন্ত্রকের বন্দর উন্নয়ন বিভাগের অধিকর্তা সম্বিত ত্রিপাঠী, ইন্ডিয়ান পোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের এমডি জনার্দন রাও এবং মন্ত্রকের পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশিপ(পিপিপি) সংক্রান্ত উপদেষ্টা অনুজ অগ্রবাল গত ১৮ নভেম্বর হলদিয়া ঘুরে দেখেন।
তাঁদের রিপোর্ট এ বার বন্দর-কর্তৃপক্ষের হাতে এসেছে। এবং মন্ত্রক সূত্রের খবর: হলদিয়ায় ‘সব স্বাভাবিক’ বলে রাজ্যের যে দাবি, রিপোর্টে আদৌ তার সমর্থন মেলেনি। বরং তাতে কার্যত এবিজি-র অভিযোগই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কী রকম?


বিদায়ের নেপথ্যে
প্রশাসনিক কারণ
রাজনৈতিক চাপে বাড়তি শ্রমিক
বন্দরে লাগাতার শ্রমিক অসন্তোষ
বাইরে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি
রাজ্য প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা
আর্থিক কারণ
মন্দায় বাণিজ্যে ভাটা
পণ্য-পরিমাণে ঘাটতি

এবিজি’র বক্তব্য ছিল: কম দরে বরাত নেওয়ার লোকসান তারা পুষিয়ে উঠতে পারত খালাসের জন্য পর্যাপ্ত পণ্য পেলে। কিন্তু তা পাওয়া যায়নি। উপরন্তু রাজনৈতিক চাপে অতিরিক্ত কর্মী নিতে হয়েছে, সঙ্গে পোহাতে হয়েছে একটানা শ্রমিক অসন্তোষের আঁচ। বস্তুত হলদিয়া-ত্যাগের পিছনে আইন-শৃঙ্খলার অবনতিকেই মূলত দায়ী করেছিল এবিজি। কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টও বলছে, রাজনৈতিক চাপের মুখে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি শ্রমিক নিতে এবিজি বাধ্য হয়েছে। পাশাপাশি বন্দরের মধ্যে গোপনে-প্রকাশ্যে শ্রমিকদের তাতিয়ে তোলা হচ্ছিল, বাইরেও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছিল। ফলে রাজ্য সরকারের উপরে এবিজি ও তার ফরাসি সহযোগী সংস্থা এলডিএ আস্থা হারিয়ে ফেলে বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। রিপোর্টে স্বীকার করা হয়েছে, আর্থিক মন্দার জেরে ওঠানো-নামানোর জন্য পর্যাপ্ত পণ্য এবিজি পায়নি। তাতে দিন দিন লোকসানও বেড়েছে।
এবং এ সবের জেরে এলডিএ কোনও মতেই হলদিয়ায় থাকতে রাজি হয়নি বলে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের অভিমত। ফলে পাট গোটানো ছাড়া এবিজি’র উপায় ছিল না। হলদিয়া বন্দরের স্বার্থরক্ষায় খাতিরেই এবিজি-কে ফের হলদিয়ায় ফেরাতে জাহাজ মন্ত্রক ও কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় দল। তাদের পরামর্শ: ১২ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টে বন্দর-এবিজি যে রফা হয়েছিল, তা মেনে এবিজি’কে ২ ও ৮ নম্বর বার্থে কাজে ফেরানোর চেষ্টা হোক। তারা না-ফেরা পর্যন্ত অন্য সংস্থার মোবাইল হারবার ক্রেন এনে জরুরি ভিত্তিতে দুই বার্থে জমে থাকা মাল খালাসের সুপারিশও করেছেন দিল্লির প্রতিনিধিরা।
বন্দর-কর্তৃপক্ষের কী বক্তব্য? রাজ্য প্রশাসনই বা কী বলছে?
কলকাতা বন্দরের (কেপিটি) চেয়ারম্যান মণীশ জৈন বলেন, “রিপোর্ট নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর কিংবা জেলা পুলিশ প্রশাসনের কোনও কর্তাও এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। মহাকরণের এক সূত্রের কথায়, “এখনও জাহাজ মন্ত্রক আমাদের কিছু বলেনি। বললে রাজ্যের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া হবে।” কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান সম্বিত ত্রিপাঠীর মন্তব্য, “জাহাজ মন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দিয়ে দিয়েছি। আর কিছু বলব না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.