ইডেন গার্ডেনস! আমার জীবনের অন্যতম স্পেশাল জায়গা। যেখানে আমি বরাবর শুধুই সাফল্য পেয়েছি। ইডেন নিয়ে প্রত্যেকটা স্মৃতি খুব সুখের। বহু দিন বাদে এ বার এমন হবে যে, ইডেনে টেস্ট ম্যাচ হচ্ছে অথচ তাতে আমি খেলছি না।
কলকাতা সব সময় দারুণ টেস্ট ম্যাচ উইকেট তৈরি করে। যেখানে প্রথমের দিকে ব্যাট করে আরাম। তবে খেলা যত গড়ায় উইকেট তত স্পিন সহায়ক হয়ে ওঠে। বিশেষ করে তৃতীয় দিন থেকে। আর বছরের এই সময়টা এখানকার আবহাওয়া সাহায্য করে পেসারদের। ইডেনের আউটফিল্ড অসম্ভব দ্রুত। শট খেলতে পারলে তার দারুণ দাম পাওয়া যায়। আর এই সব কারণেই ইডেনে খেলার মোড় ঘোরে খুব তাড়াতাড়ি। বিশেষ করে টেস্টের তৃতীয় দিন বিকেলের দিক থেকে। তাই যে-ই আগে ব্যাট করুক, তার জন্য সব থেকে জরুরি হবে বড় রান তুলে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা।
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টটা বেশ দাপটের সঙ্গে খেলে জিতেছে। কিন্তু তার জন্য ভারতীয় দলের ভেঙে পড়ে কাঁধ ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়ানোর কোনও দরকার নেই। আমার মনে হয়, দ্বিতীয় আর তৃতীয় টেস্টের মাঝে এতগুলো দিনের লম্বা বিশ্রাম পেয়ে ভারতের উপকারই হবে। একটা হারের পরে পরেই আবার মাঠে নামতে হলে যে কোনও দলের জন্য নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টাটা অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আমার মতে, মুম্বই টেস্টের পরে এই ব্রেকটা ভারতীয় দলকে নিজেদের খেলা কাটাছেঁড়া করে দেখতে সাহায্য করেছে। কী কী ভুল-ত্রুটি হয়েছে সেটা বের করে নিয়ে ওরা নিশ্চয়ই নেটে সেগুলো শুধরে ফেলতে খেটেছে। নতুন করে লড়াইয়ের জন্য ওরা এখন তৈরি।
সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, দশ দিনের বিশ্রামটা বিশেষ করে সাহায্য করবে ভারতীয় বোলারদের। আমদাবাদ আর মুম্বইয়ে ওদের একটানা অনেকগুলো ওভার বল করতে হয়েছে। কলকাতা টেস্টের আগে বিশ্রাম পাওয়ায় ইডেনে ওরা অনেক ঝরঝরে তরতাজা হয়ে নামবে। সিরিজের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে সেটা ভারতের জন্য খুব জরুরি ছিল।
সিরিজ ১-১ ড্র চলছে। এই অবস্থায় ভারত কলকাতা টেস্টটাকে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট হিসাবে দেখবে। ভারতের সব থেকে বড় আশার আলো ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। মানছি, মুম্বইয়ে ওরা দারুণ সফল। কিন্তু ভুলবেন না যে কুক, পিটারসেন আর প্রায়র বাদে বাকিরা কেউই কিন্তু এখনও পর্যন্ত ভারতীয় পিচ বা ভারতীয় স্পিনারদের সামনে স্বচ্ছন্দ নয়। ধোনিদের তাই মনে রাখতে হবে, ওদের ব্যাটসম্যান আসলে দু’জন। যদি কুক আর পিটারসেনকে দ্রুত ফেলতে পারে, তা হলে ইংল্যান্ডকে বড় ধাক্কা দেওয়া যাবে। অন্য দিকে, মুম্বইয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে গম্ভীরের ব্যাটিং দেখার পর মনে হচ্ছে ওর কাছ থেকে কলকাতায় বড় ইনিংস পেতে চলেছি আমরা। গম্ভীর আর বীরু মজবুত ভিত গড়ে দিলে ইডেনে ভারত বড় রান তুলবেই। আর সেই পুঁজি হাতে নিয়ে আমাদের বোলাররা ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের আক্রমণ করার সুযোগ পাবে। কলকাতায় দু’টো দলই জেতার জন্য মরিয়া থাকবে। দুই ক্যাপ্টেনই চাইবে আক্রমণাত্মক খেলে সিরিজে ২-১ এগিয়ে গিয়ে নাগপুরে নামতে। মুম্বইয়ের জয় ইংল্যান্ডকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেবে। অন্য দিকে, ভারত তাতবে এটা ভেবে যে ইডেনে আমরা ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলে এসেছি। |