নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
এক সময় খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায় সিপিএমের দাপুটে নেতা ছিলেন মিহির পাহাড়ি। পরে তাঁর বিরুদ্ধে নানা দলবিরোধী কাজের অভিযোগ ওঠে। সিপিএম থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। সেই মিহিরবাবু এ বার দলবল নিয়ে সিপিআইয়ে যেতে পারেন বলে খবর। মিহিরবাবুর কথায়, “সিপিএমের কিছু নেতাকে দুর্নীতি এতটাই গ্রাস করেছে
|
মিহির পাহাড়ি।
—ফাইল চিত্র। |
যে, তাঁরা বেরিয়ে আসতে পারছেন না। এর প্রতিবাদ করাতেই আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। আমিও দলে থাকব না লিখিত জানিয়ে দিয়েছি।”
পাশাপাশি ভাবছেন নতুন কোনও দলে যোগ দেওয়ার কথা। মিহিরবাবু বলেন, “অনেক দলের নেতারাই তাঁদের সঙ্গে যেতে বলেছেন। তবে আমি বামপন্থী রাজনীতি ছাড়তে পারব না। কোনও বামপন্থী দলেই থাকব।” কোন দলে প্রকাশ্যে তা নিয়ে মুখ খুলছেন না। ঘনিষ্ঠ মহলে অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি সিপিআইয়ে যোগ দিতে আগ্রহী। সঙ্গে তাঁর অনুগামীরাও দলবদল করবেন। মিহিরবাবুর বক্তব্য, “যাঁরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে, তাঁরাই আমার সঙ্গে অন্য দলে যোগ দেবেন।”
যদিও সিপিএমের খড়্গপুর গ্রামীণ জোনাল কমিটির সম্পাদক কমল পলমলের দাবি, “আমাদের দলে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা দলের হয়েই কাজ করছেন। বরং আগে কিছু মানুষ বসে গিয়েছিলেন ওই নেতার খারাপ ব্যবহারের জন্য। তাঁরা আবার সক্রিয় হচ্ছেন।” তবে মিহিরবাবুর সিপিআইয়ে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে সিপিআইয়ের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
মিহির পাহাড়ি দীর্ঘদিন ধরেই বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এক সময় দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরপর দু ’বার খড়্গপুর গ্রামীণ জোনাল কমিটির সম্পাদক হয়েছেন। পাশাপাশি খড়্গপুর শিল্পাঞ্চলে সিটুর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন। ছিলেন সিটুর রাজ্য কাউন্সিলের সদস্য। বছর দু’য়েক আগে থেকে দীপকবাবুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়। ক্রমে দলের মধ্যে মিহিরবাবুর গুরুত্ব কমতে থাকে। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে তাঁকে আর জোনাল সম্পাদক পদে রাখেনি দল। জোনাল কমিটির সদস্যপদও খারিজ করে দেওয়া হয়। তবে সিপিএমের জেলা কমিটিতে ছিলেন। গত অগস্টে তাঁর বিরুদ্ধে আরএসপি-র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগ ওঠে। মিহিরবাবুকে শো-কজ করা হয়। গড়া হয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও তাঁকে অভিযুক্ত প্রমাণ করে ফের জবাব দিতে বলা হয়।
মিহিরবাবু বলেন, “আমি আগেই শো-কজের উত্তর দিয়েছিলাম। ফলে পরে আর উত্তর দিতে রাজি হইনি। শুধু লিখিত ভাবে জানাই, আমি বোধ হয় দলে থাকার উপযুক্ত নয়।” তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরে সিপিএম থেকে যে তাঁকে চিরতরে বহিষ্কার করা হবে, তা বুঝে আগেভাগেই তিনি দল ছেড়ে দেবেন বলে লিখিত ভাবে জানিয়ে দেন। তারপর থেকেই শুরু হয় অন্য দলে যাওয়ার প্রস্তুতি।
|