বেচারামের বিরুদ্ধে কোর্টে নালিশ, নোটিস বিধানসভায়
সিঙ্গুর-রায় নিয়ে মন্ত্রী বেচারাম মান্নার মন্তব্যের জল গড়াল আদালত ও বিধানসভায়।
বেচারামবাবু সিঙ্গুরে রবিবার যে মন্তব্য করেছেন, ত নিয়ে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টের অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি প্রতাপ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মনে করে, এই ধরনের আচরণ বন্ধ হওয়া উচিত। তবে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই মামলা করবে না। কোনও আবেদনকারী তথ্য-সহ আদালত অবমাননার মামলা করলে তার গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনা করবে।
আইনজীবী কল্লোল বসু সোমবার ডিভিশন বেঞ্চকে জানান, টাটা-সিপিএম একজোট হয়ে এবং তাদের অনুগত বিচারক দিয়ে সিঙ্গুর মামলায় রাজ্য সরকারকে হারিয়ে দিয়েছে বলে জনসভায় মন্তব্য করেছেন এক মন্ত্রী। সাংবিধানিক দায়িত্ব মাথায় রাখলে এক জন বিধায়ক এমন মন্তব্য করতে পারেন না। এতে আদালত অবমাননা হয়েছে। এর ফলে আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা কমবে। ওই মন্ত্রী যা বলেছেন, তা তাঁর এক্তিয়ার বহির্ভূত। অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি এর পরে বলেন, এই জাতীয় আচরণ বন্ধ হওয়া উচিত। ডিভিশন বেঞ্চ কল্লোলবাবুকে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন করতে বলেছে।
আদালতে যখন বেচারামবাবুর মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সেই দিনই কৃষি প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অধিকার ভঙ্গের নোটিস জমা দিয়েছেন সিপিএমের বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। সিপিএমকে জড়িয়ে সিঙ্গুরের রায় নিয়ে মন্তব্য করার জন্যই বেচারামবাবুর বিরুদ্ধে অধিকার ভঙ্গের নোটিস দিয়েছেন রেজ্জাক। বিধানসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে শুক্রবার। স্পিকার ওই নোটিস গ্রহণ করলে বেচারামবাবুর মন্তব্য নিয়ে সেখানে আলোচনা হবে।
কল্লোলবাবু এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদালত অবমাননার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। এর আগে হাইকোর্টে বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত ও বিচারপতি অসীম মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি আদালত অবমাননার মামলার দীর্ঘ শুনানি হয়েছিল। শুনানির শেষে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, রায় পরে জানানো হবে। কিন্তু এরই মধ্যে বিচারপতি সেনগুপ্ত উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টে বদলি হন। ফলে, ওই রায় হয়নি। কল্লোলবাবু বিষয়টি অস্থায়ী প্রধান বিচারপতিকে জানান। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই মামলার আবেদনকারী আবেদন জানালে অন্য ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির ফের শুনানির ব্যবস্থা হবে।
নতুন মন্ত্রীকে নিয়ে অস্বস্তির প্রেক্ষিতে সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিল্প ও পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মহাকরণে এ দিন তিনি বলেন, “বেচার সঙ্গে কথা বলব। খবরের কাগজ দেখে কোনও মন্তব্য করব না। আগে কী বলেছে, পরে কী বলেছে, সব জেনে তার পরে কথা বলব। আইনের প্রতি আমাদের সম্মান আছে। সেই সম্মান আমরা দেখাব।” তাঁর বক্তব্য, সিঙ্গুরের ব্যাপারে আগে এক বার জিতে পরে আবার হেরেছে রাজ্য সরকার। এখন সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা চলছে, সেখানে তাঁদের বক্তব্য জানানো হবে। পার্থবাবুর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা লড়াই করছি। যত দ্রুত চাষিরা জমি ফেরত পান, আমরা সেটাই চেষ্টা করছি।”
এ দিন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “কোনও মন্ত্রী এমন মন্তব্য করতে পারেন, ভাবতে পারি না! তাঁর মন্তব্য সংবিধানের শপথের সঙ্গে মেলে না। মন্ত্রীর কথায় মনে হয়, তিনি সংবিধান পড়েননি। আইন নিয়ে তাঁর ন্যূনতম ধারণাও নেই! মন্ত্রীদের যাতে সংবিধান ও আইন নিয়ে ন্যূনতম ধারণা থাকে, তার জন্য যেন মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন!”
বিচার বিভাগ সম্পর্কে বেচারামবাবুর এই মন্তব্যের ফলে কী হতে পারে বলে তাঁর মত? বিমানবাবু বলেন, “উনি আদালত না বিচারব্যবস্থা, কী সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন জানি না। যাঁদের ব্যাপারে বলেছেন, প্রয়োজন হলে তাঁরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।” আদালত অবমাননার দায়ে বাম আমলে হাইকোর্টে দুঃখপ্রকাশ করতে হয় বিমানবাবুকে। হাইকোর্টের বিচারপতি অমিতাভ লালার সম্পর্কে মন্তব্য করায় ওই মামলা হয়েছিল।

রবীন্দ্রনাথের না
সহায়ক মূল্যে ধান কিনবে রাজ্য সরকার। সেই কারণে আজ, মঙ্গলবার সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য-সহ মহকুমার চার বিধায়ককে চিঠি দিয়ে বৈঠকে ডেকেছেন চন্দননগরের মহকুমাশাসক বিশ্বনাথ। রবীন্দ্রনাথবাবু সেই চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বৈঠকে থাকবেন না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.