সম্পাদকীয় ২...
উদ্ভ্রান্ত বিজেপি
বশেষে বি এস ইয়েদুরাপ্পা বিজেপি ছাড়িয়াই দিলেন। কর্নাটকে দলের জয়ের প্রধান স্থপতি ইয়েদুরাপ্পা দুর্নীতির দায়ে মুখ্যমন্ত্রিত্ব হইতে অপসারিত হইয়াও রাজ্য-রাজনীতির উপর আপন নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখিতে চাহিয়াছিলেন। দলও তাঁহাকে না-চটাইবার কৌশলই অবলম্বন করিয়াছিল। তাঁহার পিছনে রাজ্যের প্রভাবশালী ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের সমর্থনের কথা বিবেচনা করিয়া তাঁহাকে তুষ্ট করার নানা পন্থা লওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলীয় নেতৃত্বকে ‘শিক্ষা দিতে’ই ইয়েদুরাপ্পা বিজেপি ছাড়িয়া তাঁহার নিজস্ব সংগঠন ‘কর্নাটক জনতা দল’ গঠন করিয়াছেন। সঙ্গে-সঙ্গে যে রাজ্য বিজেপিতে দলত্যাগের বান ডাকিয়াছে, এমন নয়। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পার আশা এবং বিজেপির আশঙ্কা, দলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিন বেশ কিছু বিধায়ক কর্নাটক জনতায় শামিল হইবেন।
আর এখানেই যত গোলমালের সম্ভাবনা। ২২৫ আসনের রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির সদস্যসংখ্যা মাত্র ১১৯। অর্থাৎ জনা সাতেক বিধায়ক ইয়েদুরাপ্পার দলে যোগ দিলেই নির্বাচিত বিজেপি সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী। অথচ দক্ষিণ ভারতে বিজেপির একমাত্র অস্তিত্ব এই কর্নাটকেই। গত লোকসভা নির্বাচনেও দাক্ষিণাত্যের ১৩০টি আসনের মধ্যে বিজেপি যে ১৮টি আসনে জয়ী হয়, তাহার সব কয়টিই কর্নাটকে। সেই কর্নাটকেই ইয়েদুরাপ্পার বিদ্রোহ যদি দলকে বিপর্যস্ত করিয়া দেয়, তবে জাতীয় দল হিসাবে বিজেপির বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে ঠেকিবে, এবং দিল্লিতে দলীয় সরকার গড়ার দৌড়েও তাহার দাবি কমজোর হইয়া পড়িবে। কর্নাটকের প্রাদেশিক নেতৃত্ব ইয়েদুরাপ্পার বিদ্রোহকে যতই লঘু ও অকিঞ্চিৎকর বলিয়া দেখান না কেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানেন ইয়েদুরাপ্পাকে হারাইবার তাৎপর্য কী। সব জানিয়া-বুঝিয়াও যে দল বিশেষ কিছু করিতে অপারগ, তাহার কারণ দলের বর্তমান দিশাহীন দশা। স্বয়ং দলপতি নিতিন গডকড়ীর কর্তৃত্ব লইয়াই এই মুহূর্তে দলে গোলমাল। একের পর এক শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সাংসদ দলপতির বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁহার ইস্তফা দাবি করিতেছেন। তাঁহাদের নিরস্ত করিবার চেষ্টাও বিশেষ ফলপ্রসূ হইতেছে না। ইয়েদুরাপ্পাকে যদি দুর্নীতির কারণেই সসম্মানে পুনর্বাসিত করা না গেল, তবে একই কারণে স্বয়ং দলপতি স্বপদে বহাল থাকিয়া যান কোন যুক্তিতে? প্রশ্নকর্তার মুখে লাগাম পরানো যায়, কিন্তু প্রশ্নের মুখে নয়। তাহা ক্রমাগত নেতৃত্বের বৈধতা হ্রাস করিতে থাকে। ও দিকে দলের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী লইয়া কাজিয়ারও নিরসন হয় নাই। এ ব্যাপারে নরেন্দ্র মোদী অন্যদের তুলনায় আগাইয়া থাকিলেও তিনি সর্বজনগ্রাহ্য নন। সংঘ পরিবারের হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণও আর দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখিতে আগের মতো কার্যকর নয়। স্বভাবতই বিজেপি স্বস্তিতে নাই। একের পর এক অপশাসনের পরাকাষ্ঠা রচনা করিয়াও কংগ্রেস পরিচালিত ইউপিএ-২ সরকার যে তুলনামূলক নিরাপত্তা অনুভব করিতেছে, তাহার কারণ, জাতীয় বিরোধী দলের এই ছন্নছাড়া ও উদ্ভ্রান্ত অবস্থা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.