|
|
|
|
প্রসঙ্গ এফডিআই |
তৃণমূলের ভোট নিয়ে দড়ি টানাটানি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বহু ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি (এফডিআই) নিয়ে সংসদে ভোটাভুটির প্রশ্নে বেশ কিছু দিন পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে রাজধানীতে দড়ি টানাটানি শুরু হল। বিজেপি-র বক্তব্য, গোঁসা ছেড়ে তাদের পাশে দাঁড়াক তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোট দিক সরকারের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, কংগ্রেসের বক্তব্য, সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে হাত না-মেলানোই
উচিত মমতার। তা হলে রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।
শেষ পর্যন্ত তৃণমূল এফডিআই নিয়ে সরকারের বিপক্ষে ভোট দেবে, নাকি ভোটদান থেকে বিরত থাকবে সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি মমতা। আজ দলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে সব তৃণমূল সাংসদের কাছে আগামী দু’দিন সংসদে উপস্থিত থাকার বার্তা গিয়েছে। আগামী কাল লোকসভায় এফডিআই নিয়ে বিতর্কে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বক্তৃতা দেবেন সৌগত রায়। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, ভোটে কী কৌশল নেওয়া হবে, বক্তৃতা পর্ব শেষ হলে সে ব্যাপারে নির্দেশ পাঠাবেন মমতা। আগামীকাল ফেমার সংশোধনীর সংশোধন চেয়ে ভোটাভুটির ডাক দেবে তৃণমূল। প্রশ্ন উঠেছে, মমতা যদি এফডিআইয়ের বিরোধিতা করেই ভোট দেন, তবে এখনই ঘোষণা করছেন না কেন? তাঁর অবস্থান তো সবার জানা। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, সম্ভবত হাতের তাস লুকিয়ে তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে দর কষাকষি করতে চাইছেন। যাতে বিভিন্ন বিষয়ে তৃণমূলের উপরে যে চাপ তৈরির চেষ্টা করছে কংগ্রেস, তা থেকে রেহাই মেলে।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের গোড়াতেই সরকারের বিরুদ্ধে মমতার আনা অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থন করেনি বিজেপি। কিন্তু এখন বিজেপি নেতৃত্বই ১৮৪ ধারার ভোটাভুটিতে তৃণমূলকে পাশে চাইছে। বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, “অনাস্থা প্রস্তাবের সময় আমরা তৃণমূলের পাশে দাঁড়াইনি বলে তাদের সাময়িক গোঁসা হতে পারে। কিন্তু আমরা নিশ্চিত, এ বার ভোটাভুটির সময় সরকারের বিপক্ষেই ভোট দেবে তৃণমূল। কারণ, এই বিষয়ে প্রতিবাদ করে মমতা ইউপিএ থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছিলেন।” তাঁর বক্তব্য, এই বিষয়টি নিয়ে তাই অন্য কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া তৃণমূলের পক্ষে সম্ভব নয়।
উল্টো দিকে কংগ্রেস নেতা শাকিল আহমেদ বলেন, “বিজেপি-র মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির আনা প্রস্তাব যদি মমতা সমর্থন করেন, তা হলে তিনি কার্যত পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন।” তাঁর যুক্তি, লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা ১৯-এ পৌঁছেছে কংগ্রেসের সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষ জোট গড়েই। শাকিলের প্রশ্ন, তা হলে আজ সেই মমতা কী ভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে হাত মেলাবেন?
তৃণমূলের সাংসদরা কিন্তু মনে করছেন, এফডিআই নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত। ভোটদান থেকে বিরত থাকলে ভুল বার্তা যাবে। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, গোটা বিষয়টি কার্যত তৃণমূলেরই উত্থাপিত। মমতাই প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। তাই, এখন এফডিআই-বিরোধিতার মঞ্চ ছেড়ে যাওয়াটা ঠিক হবে না। |
|
|
|
|
|