|
|
|
|
মুলায়মে ধোঁয়াশাই |
খুচরো নিয়ে মায়ার ইঙ্গিতে ভরসা খুঁজছে কেন্দ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে নীতিগত আপত্তি জানিয়েও এ ব্যাপারে সংসদে ভোটাভুটিতে সরকারের পাশে থাকারই ইঙ্গিত দিলেন মায়াবতী।
বিদেশি লগ্নির এই সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে কাল লোকসভায় আলোচনা ও তার পর ভোটাভুটি হওয়ার কথা। মুলায়ম সিংহ এখনও ধোঁয়াশা রেখে দিলেও দলিত নেত্রীর ইঙ্গিতে স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা স্বস্তিতে কংগ্রেস। যদিও বসপা সরকারের পক্ষে ভোট দেবে, নাকি ভোটাভুটির সময় অনুপস্থিত থাকবে তা এখনও খোলসা করেননি দলিত নেত্রী। বরং সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে তফসিলি জাতি ও উপজাতির জন্য সংরক্ষণ চালু করার বিল পাশ করানোর জন্য সরকারকে চাপে রেখে দর কষাকষির রাস্তাই খোলা রাখলেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে মায়াবতী আজ জানিয়ে দেন যে, এখনও তিনি মনে করেন না যে, খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি এলেই সকলের মঙ্গল হবে। তবে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের একটা ইতিবাচক দিক হল, কোনও রাজ্যের উপর এটা চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া, সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া কতটা সঙ্গত হবে, বসপা তা-ও বিবেচনা
করে দেখছে।
মায়াবতীর মতোই খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নিতে আপত্তি রয়েছে ইউপিএ-র অপর সমর্থক দল সমাজবাদী পার্টিরও। তবে ভোটাভুটিতে তিনি কী অবস্থান নেবেন, সেই তাস লুকিয়ে রেখেছেন মুলায়ম সিংহ। শেষ মুহূর্তেও সরকারকে ধোঁয়াশায় রেখে তিনি বলেছেন, “সংসদেই অবস্থান জানাবে সপা।”
তুলনায় মায়াবতীর এ দিনের বক্তব্য খানিকটা ভরসা জোগালেও পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব। কারণ, মুলায়ম কী করছেন দেখে, শেষ মুহূর্তেও সিদ্ধান্ত বদলে ফেলতে পারেন দলিত নেত্রী।
তবু দু’জনের অবস্থানই যাতে সরকারের অনুকূলে যায়, সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে সনিয়া গাঁধীর দল। কংগ্রেস চাইছে, মুলায়মের দল ভোট বয়কট করলেও মায়া-বাহিনী যেন পক্ষে ভোট দেন। কারণ একমাত্র সে ক্ষেত্রেই লোকসভায় জেতার পর রাজ্যসভাতেও সরকারের জেতার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। কী ভাবে? কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, এটা কখনওই হতে পারে না যে মায়া-মুলায়ম একই অবস্থান নেবেন। আবার দু’জনের কেউই লোকসভায় এক অবস্থান নিয়ে রাজ্যসভায় উল্টোটি করবেন সে সম্ভাবনাও কম। লোকসভায় জয়ের ব্যাপারে কংগ্রেস এখন অনেকটাই নিশ্চিত। মায়া-মুলায়ম ভোট বয়কট করলেও গরিষ্ঠতা প্রমাণে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। কিন্তু রাজ্যসভায় সপা ভোটাভুটিতে অনুপস্থিত থাকার পর বসপা ভোট দিলেও গরিষ্ঠতা থেকে ১টি ভোট পিছিয়ে থাকবে সরকার।
অঙ্কটা বাম-বিজেপি-র কাছেও পরিষ্কার। তাদের বক্তব্য, ১ ভোটে পরাস্ত হলেও সেটা সরকারের নৈতিক হার। সে ক্ষেত্রে খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। অতীতে বালকো-র বিলগ্নিকরণের প্রশ্নে এনডিএ সেই পদক্ষেপই করেছিল। বামেরা এ-ও বলছেন, ফেমা আইন সংশোধন নিয়েও রাজ্যসভায় বিল পাশ করাতে হবে। নয়তো তাঁরা আদালতে যাবেন। সিপিএম সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট আজ বলেছেন, “ওয়ালমার্ট দোকান খুললে প্রয়োজনে বামেরা তার বাইরে ধর্ণা দেবে।” কংগ্রেস অবশ্য নৈতিকতার প্রশ্ন উড়িয়ে বলে যাচ্ছে, খুচরোয় বিদেশি লগ্নি নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের উপরে রাজ্যসভায় ভোটাভুটির কোনও দরকারই নেই। যদিও রাজনৈতিক ভাবে এগিয়ে থাকতে কংগ্রেস রাজ্যসভাতেও গরিষ্ঠতা প্রমাণে মরিয়া। দৌত্য চালিয়ে যাচ্ছে মায়াবতী-মুলায়মের সঙ্গে। সরকারের সমর্থক হয়েও যাঁরা তাস দেখাতে নারাজ। শেষ মুহূর্তেও। |
|
|
|
|
|