পাত্র ‘দার্জিলিঙের চা-পাতা’ কিনে সটান হাজির হবু শ্বশুরবাড়িতে। ইচ্ছে, নিজের হাতে সেই চা তৈরি করে হবু শাশুড়ি, শ্যালক ও বৌকে খাওয়াবে। সে কথা শুনে সকলেই অবাক। এমন ‘ভাল’ মনের পাত্রও আছে তা হলে!
চা করে নিয়ে এল পাত্র। আর তার পরে যা হওয়ার তা-ই হল। চা খেয়ে চোখে সর্ষেফুল দেখতে শুরু করলেন সকলেই। জ্ঞান ফিরতে তাঁরা দেখলেন, গয়নাগাঁটি, মোবাইল নিয়ে উধাও হয়েছে হবু জামাইবাবাজি।
পুলিশ জানায়, তিলজলার ঘোষ পরিবার তাদের স্কুলশিক্ষিকা মেয়ের জন্য মাস চারেক আগে খবরের কাগজে ‘পাত্র চাই’ বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। তা দেখে মাসখানেক আগে পাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এক যুবক। নিজেকে সে বাগবাজারের বাসিন্দা, প্রোমোটার সমীর রায় বলে পরিচয় দেয়। পাত্রীর বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াতও শুরু করে সে। তার কথায়, ব্যবহারে ধীরে ধীরে মুগ্ধ হন হবু শ্বশুরবাড়ির সকলেই।
পুলিশ জানিয়েছে, তিলজলার কুষ্ঠিয়া আবাসনের ওই ঘোষ পরিবারের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়েই হবু পাত্র সমীর রায় চায়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে বেহুঁশ করে কয়েক লক্ষ টাকার গয়না এবং মোবাইল চুরি করেছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি রবিবার ঘটলেও সোমবার ওই পরিবারের পক্ষ থেকে তিলজলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ‘প্রতারক’ ওই যুবকের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই পলাতক ওই পাত্র। প্রতারিত পাত্রী সোমবার বলেন, “সমীর আমাদের বলেছিল, সে বাগবাজারে প্রোমোটারি করে। পরিবারের কেউ তার সঙ্গে কখনও না আসায় প্রথমে আমাদের সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু ও জানায়, পরিবাবের সকলেই কোচবিহারে থাকেন। তাঁদের সঙ্গে ওর সম্পর্ক নেই। এই কথা শুনে আমরা খুব সহজ মনে সমীরকে বিশ্বাস করে নিয়েছিলাম।”
পুলিশের দাবি, সমীরের আনা চা খেয়েই ওই পরিবারের সকলে বেহুঁশ হয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ন’টার পরে জ্ঞান ফিরলে তাঁরা দেখতে পান, সমীর উধাও। সেই সঙ্গে উধাও পাত্রীর দু’টি সোনার চুড়ি-সহ কয়েক লক্ষ টাকার গয়না। খোয়া গিয়েছে পাত্রীর মোবাইল ফোনটিও। পুলিশের অনুমান, চায়ের সঙ্গে কোনও মাদক মিশিয়ে ছিল সমীর। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, হবু পাত্রের নাম-ঠিকানাও ভুয়ো। ওই প্রতারকের ছবি আঁকানো হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ। |