লোবাকে হাতিয়ার করেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে বীরভূমে নিজেদের সংগঠিত করার কাজ শুরু করল বামফ্রন্ট। সোমবার দুপুরে সিউড়িতে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বামপন্থী কৃষক সংগঠনগুলির অবস্থান ও বিক্ষোভ আন্দোলনই সেই জল্পনাকে উস্কে দিল। এ দিন লোবা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ক্ষতিপূরণের দেওয়ার দাবিতে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়ে মিছিল করে সিউড়ি শহর পরিক্রমাও করেন আন্দোলনকারীরা।
বীরভূমে কৃষকসভার সভাপতি তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “জমি নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট কোনও গাইড লাইন নেই। সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ থেকে শিল্পপতি সকলেই দিশাহারা। যার জ্বলন্ত প্রমাণ বীরভূমের লোবা।” তাঁর দাবি, “আমরাও চাই লোবায় খনি গড়ে উঠুক। কিন্তু তা হতে হবে চাষি থেকে এলাকার সাধারণ মানুষ, সবার স্বার্থরক্ষা করেই।” এ দিনের আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের কৃষক সংগঠনের জেলা সভাপতি আব্দুল হান্নান, সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক অপূর্ব মণ্ডল-সহ বীরভূম জেলার অন্যান্য বাম নেতা-কর্মীরাও।
সোমবারের আন্দোলনে উপযুক্ত তদন্ত করে লোবা-কাণ্ডে গুলি চালানোয় দোষী পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কিংবা নিরীহ গ্রামবাসীদের উপর থেকে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি তো ছিলই। তবে মূল দাবির সুর ছিল, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লোবার জমিজট কাটানোই। যেমন জেলাশাসকের কাছে তাঁরা দাবি করেন, খনির জন্য এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও সমস্ত বর্গাদার, পাট্টাদার, দখলদার চাষিদের কম করে ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, ওই প্রকল্প গড়ে ওঠার জন্য এলাকার যে-সব ক্ষুদ্র কুটিরশিল্পী ও মৎস্যজীবী ক্ষতির মুখে পড়বেন তাঁদেরও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তুলেছেন বামপন্থীরা। তাঁদের আরও দাবি, প্রস্তাবিত খনি এলাকায় অধিগৃহীত গ্রামগুলির বাসিন্দাদের পুনর্বাসন-সহ সমস্ত রকমের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। সেই সঙ্গে দালাল চক্রের মাধ্যমে জমি বেচা-কেনার প্রক্রিয়া বন্ধ করার পাশাপাশি শিল্পের জন্য জমি কেনার ক্ষেত্রে সরকারি হস্তক্ষেপেরই দাবি তাঁরা জানিয়েছেন।
জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “স্মারকলিপি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |