অপুকে নিয়ে ট্রেন দেখতে ছুটেছিল দুর্গা। কাশবনের বুক চিরে ট্রেন চলে যাওয়ার সেই দৃশ্য দেখে বিস্ময় জেগেছিল দুই শিশুর। অবিকল না হলেও কতকটা সেই দৃশ্যই জেগে উঠল রামপুরহাট সংলগ্ন ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়া থানার পিনারগড়িয়ায়। রেলপথের দু’ ধার থেকে লেভেল ক্রশিং বা স্টেশন সর্বত্রই উৎসুক চোখের ভিড়।
সদ্য চালু হওয়া রেলপথে ট্রেন দেখতেই তো ছুটে আসা!
এই প্রথম বাড়ির গা ঘেঁষে বেরিয়ে যাচ্ছে ট্রেন। আরও কাছ থেকে সেই দৃশ্য দেখতে তারা দাঁড়িয়ে থাকছে লেভেল ক্রসিংয়েও। ট্রেনটা সামান্য আস্তে হতেই অন্য দৃশ্য। ঝুপ-ঝাপ ট্রেনে উঠে পড়ছে জহরুল, ওসমান, পিঙ্কি, টুকটুকি-রা। সকলেই ৮ থেকে ১৪ বছরের। নতুন বিস্ময়ের সঙ্গী।
শুধু কি শিশুরাই? ট্রেন দেখতে দাঁড়িয়ে থাকছেন এলাকার অন্যান্য মানুষও। পিনারগড়িয়ার ছেলে থেকে বুড়ো সকলেই মেতেছেন ট্রেন নামক বস্তুটি দেখতে! |
সকলেরই মুখের কথা, “ট্রেন যখন কাছে এসেছে তখন একটু বসেই দেখি না কেমন লাগে!” ছোট দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে মহানন্দে ট্রেনে চেপে পড়লেন স্থানীয় বাসিন্দা নির্মলা মাহাতো!
রামপুরহাট থেকে ট্রেনটি এসে পৌঁছলে প্রায় এক ঘণ্টার জন্য মেলা বসে যাচ্ছে স্টেশন চত্বর এলাকায়। রামপুরহাট স্টেশন থেকে হকারেরা চলে আসছেন কেউ মশলা মুড়ি নিয়ে, কেউ পেয়ারা নিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দারাও কেউ কেউ খুলে ফেলেছেন তেলাভাজার দোকান! এলাকার বাসিন্দা ইসলাম খান, সোরেন লাল শা-রা বললেন, “এই প্রথম আমরা ট্রেন পেলাম। তাই প্রথম দিন থেকেই ভিড়। আগামী দিনে ট্রেনের সংখ্যা বাড়লে আরও ভাল।”
দুপুর ১টা ৩৯ মিনিট। পিনারগড়িয়া থেকে ট্রেন ফের রওনা দিল রামপুরহাটের দিকে। মিলিয়ে যাওয়া পর্যন্ত হাত নেড়ে ট্রেনকে বিদায় জানাতে থাকল পিনারগড়িয়া। |