ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্ট বা আইন কলেজ থাকলেও গোটা ব্লকে কোনও প্রথাগত ডিগ্রি কলেজ নেই। তাই উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পরে প্রতি বছরই বিপাকে পড়েন কাঁকসার কয়েকশো পড়ুয়া। সেই সমস্যা মেটাতে কলেজ গড়ার জন্য নিজেদের হাতে থাকা অতিরিক্ত জমি দানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সিলামপুর উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে দুর্গাপুরের (পূর্ব) বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা। নিখিলবাবু জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের আবেদন জানাবেন তিনি।
কাঁকসা ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতে মোট গ্রামের সংখ্যা ১০৩। জনসংখ্যা দেড় লক্ষেরও বেশি। ১৬টি হাইস্কুলের ৮টিতে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনা করানো হয়। সেখান থেকে বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্য বিভাগ মিলিয়ে বছরে কয়েকশো পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। তার পরে উচ্চশিক্ষার জন্য তাদের যেতে হয় দুর্গাপুর, মানকর, গলসি অথবা বর্ধমানে। অনেককে আবার ছুটতে হয় বোলপুরে। দূরে পড়াশোনা করতে যাওয়ার সামর্থ্য না থাকায় উচ্চ মাধ্যমিকের পরে বহু পড়ুয়া পড়াশোনা ছেড়ে দিতেও বাধ্য হয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁরা আরও জানান, ব্লক এলাকার বিভিন্ন অংশে যোগাযোগেরও সমস্যা রয়েছে। সেই সব এলাকা থেকে বাইরের কলেজে পড়তে যাওয়া কষ্টকর। কাঁকসায় একটি কলেজ গড়ে উঠলে সেই সমস্যা মিটবে বলে এলাকাবাসীর দাবি। |
বাসিন্দাদের দাবির সঙ্গে সহমত রাজনৈতিক দলের নেতারাও। তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা দলের প্রদেশ সদস্য দেবদাস বক্সীর কথায়, “কাঁকসায় একটি ডিগ্রি কলেজ গড়ে উঠলে এলাকার দুঃস্থ পড়ুয়ারা বিশেষ ভাবে উপকৃত হবে।” একই বক্তব্য সিপিএমের কাঁকসা জোনাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক তথা দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলেরও।
সিলামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল জানান, প্রতি বছর তাঁদের স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরে বেশ কিছু পড়ুয়া কলেজে ভর্তি হতে সমস্যায় পড়ে। এই সমস্যার সুরাহা করতে স্কুল পরিচালন সমিতি কলেজ গড়তে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক খাদেম মোহর আলি খান জানান, সিলামপুর সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছে স্কুলের জমি রয়েছে। সেখানেই তিন বিঘা জমিতে ডিগ্রি কলেজ গড়া সম্ভব।
স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন প্রস্তাবে খুশি দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, কাঁকসায় ডিগ্রি কলেজের অভাবের কথা বাসিন্দারা তাঁকে জানিয়েছিলেন। শুধু কলা বিভাগ চালু হলেও বহু পড়ুয়া উপকৃত হবে বলে মত নিখিলবাবুর। তিনি জানান, ডিগ্রি কলেজ গড়ার জন্য রাজবাঁধের কাছে তিনি একটি ছোট জমিও চিহ্নিত করেন। কিন্তু তা কলেজ গড়ার উপযুক্ত নয়। নিখিলবাবুর কথায়, “অত ছোট জায়গায় ডিগ্রি কলেজের কাজকর্ম হবে না। তাই ওখানে একটি সরকারি পলিটেকনিক কলেজ গড়ার চিন্তাভাবনা চলছে। সিলামপুর স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাব।” |