নতুন পুরবোর্ড শহরের রাস্তা সংস্কারে কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ করলেন নাগরিকেরা। তাঁদের বক্তব্য, নতুন বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে চার মাস পেরিয়ে গেলেও এই সময়ের মধ্যে কোনও সংস্কারের কাজ না হওয়ায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে চলাচল বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
দুর্গাপুর শহরের ভিতরের রাস্তাগুলি দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা (ডিএসপি) কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন। তারাই ওই রাস্তার দেখভাল করে। কিন্তু এর বাইরে শহর জুড়ে যে অসংখ্য ছোট-বড় রাস্তা রয়েছে তার দেখভালের দায়িত্ব পুরসভার। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অন্তত ৮ মাস ওই রাস্তার সংস্কার হয়নি। মে মাসে পুরসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচনী আচরণ বিধি লাগু হয়। তখন থেকেই কাজ বন্ধ। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয় ৫ জুন। মোট ৪৩ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৯টি দখল করে তৃণমূল। তৈরি হয় পুরবোর্ড। ফল ঘোষণার ২৫ দিন পর শপথ নেয় নতুন বোড। মেয়র পারিষদদের দায়িত্ব বুঝে নিতে কেটে যায় আরও কয়েক সপ্তাহ। তারপর কেটে গিয়েছে চার মাস। ইতিমধ্যেই সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছে শহরের বহু রাস্তা। |
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সিটি সেন্টার, বিধাননগর, শ্যামপুর, কড়ঙ্গপাড়ার অধিকাংশ রাস্তায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়েছে। যাতায়াত একেবারে বন্ধ হয়নি ঠিকই। কিন্তু বৃষ্টিতে জল জমে গেলে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে পড়ছে। খানাখন্দে ভর্তি রাস্তায় দ্রুতগামী গাড়ি নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন চালকেরা। সিটি সেন্টারের বাসিন্দা সুশোভন পোদ্দার বলেন, “দুর্গাপুরের রাস্তায় আগে অনায়াসে গাড়ি বা মোটরবাইক চালানো যেত। কিন্তু বর্তমানে তা নেই। গতি বাড়ানো যাচ্ছে না। দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে।” বিধাননগরের বাসিন্দা অনিমেষ বসু বলেন, “রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় পথচারীরা বিপদে পড়ছেন। রাস্তার যেটুকু অংশ তুলনামূলক ভাল অবস্থায় রয়েছে, সে দিক দিয়ে গাড়ি বা মোটরবাইক চালানোর চেষ্টা করছেন চালকেরা। ফলে রাস্তার ধার দিয়ে চলাফেরা করলেও নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন পথচারীরা।” অটোচালক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “বেহাল রাস্তায় অটো চালাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ঝাঁকুনির জন্য যাত্রীরা বিরক্তি প্রকাশ করছেন। গাড়ির যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হচ্ছে।” একই অভিযোগ ৮বি রুটের বাসকর্মী ঈশান বাউড়িরও।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নতুন বোর্ডের হাতে নেই। তার সংস্থান করতে বেশ কিছু সময় লেগেছে বলে দাবি মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, “পর্যাপ্ত অর্থ নেই। তবু বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম শুরু করা হচ্ছে।” বর্তমান পুরবোর্ডে পূর্ত দফতরের মেয়র পারিষদের দায়িত্বে আছেন জেলা আইএনটিটিইউসি’র সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, প্রাথমিক সমস্যা কাটিয়ে বেশ কিছু রাস্তার সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছে পুরসভা। পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। খুব দ্রুত কাজ শেষ করে ফেলা হবে। |