জমির দখল নিতে এক রেশন দোকানের মালিককে গলা টিপে খুন করে সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে প্রধাননগর থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সত্যরঞ্জন ঘোষ (৫২)। তাঁর বাড়ি বাঘাযতীন কলোনিতে। ১৩ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। এদিন রেশন দোকানের পাশের একটি সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। ধৃতদের নাম, রাহুল ঝাঁ, চেতন ঝাঁ, সত্যেন্দ্র প্রসাদ, উদয় সিংহ, রাকেশ যাদব এবং সুজিত সিংহ। এদের বাড়ি প্রধাননগরের বিভিন্ন এলাকায়। রাহুলের প্রধাননগরেও একটি বাড়ি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা ওই এলাকায় জমি কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “ধৃতদের একজনের সঙ্গে মৃতের পরিচয় রয়েছে। সে ছট পুজোর রাতে সত্যরঞ্জনবাবুকে তাঁর বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে খুন করে সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয়। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে খবর, প্রধাননগর থানা থেকে ২০০ মিটার দূরে সত্যরঞ্জনবাবুর রেশন দোকান রয়েছে। ১৯ অক্টোবর ছট পুজোর দিন সন্ধ্যায় তাঁর দোকানের পাশ থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ঘটনার তেরোদিনের মাথায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, রেশন দোকান সংলগ্ন আড়াই কাঠা জমির মালিক রাহুলের সঙ্গে সত্যরঞ্জনবাবুর দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। সত্যরঞ্জনবাবু ২০০৫ সালে রেশন দোকানের ওই জমি রাহুলের বাবার কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন। সম্প্রতি রাহুল তাঁর আড়াই কাঠা জমি সত্যেন্দ্র প্রসাদের কাছে বিক্রি করে দেন। তার পরেই দু’জনে মিলে ওই রেশন দোকানের জমি দখল করতে ছক কষেন। সত্যরঞ্জনবাবুকে বার কয়েক হুমকি দেওয়া হয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় ছট পুজোর দিন সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে রাহুল সত্যরঞ্জনবাবুকে তার প্রধাননগরের বাড়িতে ডেকে পাঠান। সেখানেই তাঁকে গলা টিপে খুন করা হয়। রাতে রেশনের দোকানের পিছনে থাকা সেপটিক ট্যাঙ্কে মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয়।
মৃতের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখে রাহুলকে সন্দেহ করে পুলিশ। এর পরেই শুক্রবার রাতে রাহুলকে আটক করে শিলিগুড়ি থানার আইসি রাজীব ভট্টাচার্য, তদন্তকারী অফিসার সুবল ঘোষ দফায় দফায় জেরা করেন। তাতেই ভেঙে পড়ে পুরো ঘটনা অফিসারদের জানিয়ে দেয় রাহুল। ওই দিন রাতেই ছয় জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। |